বেঁচে থাকাটাও যখন অমানবিক

আমার গ্রামের হতদরিদ্র আবদুল আলীম অনেক কষ্টে আমার বাসাটা খুঁজে যে ঘটনাটা জানালো, আমি লা জওয়াব ছিলাম অনেকক্ষন। তার তেরো বছরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে কোথাও থেকে আসার পথে বাসের চাপায় তার স্ত্রীর তাৎক্ষনিক মৃত্যু হয় এবং ছেলেটা মারাত্মক আহত হয়। উরু থেকে নীচের অংশের হাড় গুড়িয়ে যায়।

মেডিক্যালে সপ্তাহ দুয়েক থাকার পর ওরা রিলিজ করে দেয়, গ্রামে গিয়ে দেখে ভেতরের হাড় মোটেও জোড়া লাগেনি। হাজার হাজার টাকা দিয়েও জোড়া লাগানো সম্ভব না আর। তার পক্ষে এক হাজার টাকা খরচ করাও সম্ভব না। ছেলেটা মুখে কথা বলতে পারে না, কেবল গোঁ গোঁ চিৎকার করে আর যাকে সামনে পায় আচড়ে খামচে রক্তাক্ত করে দেয়। এখন সে ব্যাথায় কাতরাচ্ছে, শীতে কোঁকাচ্ছে, বিছানায় পেশাব পায়খানা করে একাকার। তাকে দেখার মতো কেউ নেই। ভীষন দুরাবস্থা।

আবদুল আলীম নিজের আয়ে নিজে চলতে পারে না, আহত ছেলেটাকে কি করে সামলাবে? সে নিজেই যেখানে সামলাতে পারছে না, অন্য কেউ সহ্য করবে কেন। সুতরাং আবদুল আলীম আমার কাছে এসেছে ছেলেটাকে কোথাও দুর করা যায় কিনা সে ব্যবস্থা করতে। কোথাও কোন সংস্থা আছে কিনা সেরকম। সে বারবার আক্ষেপ করছিল দুর্ঘটনায় ছেলেটা যদি মারা যেত তাহলে তার এই কষ্টে পড়তে হতো না। সে আকুল হয়ে ছেলেটার মৃত্যু কামনা করছে যেন। কতটা অসহায় অবস্থায় পড়লে মানুষ এই কথা বলতে পারে।

আমি কোন সমাধান দিতে পারিনি। বলেছি খোঁজ নিয়ে জানাবো। এখনো পাইনি সেরকম কোন খোঁজ। কারন সেরকম কোন সংস্থার খবর আমার জানা নেই যারা এরকম মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিদের আশ্রয় লালন পালন করে। কারো কি জানা আছে? জানা থাকলে একটা মেইল দিয়ে জানাবেন প্লীজ uniresources@gmail.com

কখনো কখনো বেঁচে থাকাটাও একটা অমানবিক, অবিচার!


লেখকঃ নীড় সন্ধানী, ২৩ জানুয়ারী, ২০১০।

http://hrrh69.amarblog.com/posts/97014

1 মন্তব্য(সমূহ):

Biplob Rahman said...

Dirghoshash!!

Post a Comment

FACEBOOK FACEBOOK AMARBLOG

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub