আমাদের সংগঠন বি-স্ক্যান

বদলে যাচ্ছে সবকিছু, প্রযুক্তির বিকাশে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। দিনে দিনে হয়ে উঠছি আধুনিক। তারপরেও সত্যি কী সব কিছু বদলে যাচ্ছে?

আমরা যদি বাংলাদেশের একজন প্রতিবন্ধীর দৃষ্টিকোন থেকে চিন্তা করি, তাহলে দেখবো, আসলে তাদের জগতের তেমন কিছুই বদলাচ্ছে না। আজও প্রতিবন্ধী মানুষেরা ঘরে-বাইরে সবকিছু থেকে বঞ্চিত। আজও তারা সমাজে সম্মানের সাথে গ্রহণযোগ্য নয়।

উন্নত বিশ্বে প্রতিবন্ধীরা যখন একজন অপ্রতিবন্ধীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভোগ করছে সমান সুযোগ-সুবিধা, তখন কঠিন বাস্তবতা এই যে, আমরা এদেশে লড়াই করছি, প্রতিবন্ধীদের অস্তিত্তকে প্রমান করতে। সর্বত্রই তারা বৈষম্যের শিকার। পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র -- কারোরই যেন সময় নেই তাদের কথা ভাবার।

অন্তর্জালের কল্যাণে ফেসবুক এখন একটি জনপ্রিয় নাম। বন্ধুত্ব গড়ে তোলা, পারস্পরিক ভাব বিনিময়, তথ্য-মতামত আদান-প্রদান, স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমের প্রচার, এমন কি বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনের জন্য ক্রমেই বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা। বিভিন্ন ভাষায় বিশ্বের ১৮০ টি দেশের ৩৫ কোটিরও বেশী মানুষ নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় রয়েছেন। আর প্রতিদিনই বাড়ছে এর সদস্য সংখ্যা।

ফেসবুক এখন মানুষের কাছে দ্রুত পৌঁছে যাওয়ার একটি সহজ মাধ্যম। সব ধরণের, সব বয়সের মানুষ কম্পিউটারে তো বটেই, মোবাইল ফোনের বোতাম টিপে খুব সহজেই যে কেউ ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন।

জননন্দিত তারকারাও এখন ফেসবুককে ব্যবহার করছেন সরাসরি দর্শক মতামত জরিপের মাধ্যম হিসাবে। এখানে ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, অভিনেতা, শিল্পী, বড় বড় এনজিও, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাও আছেন। অনেক রকম মত প্রকাশের পাশাপাশি এখানে গড়ে তোলা যায় নিজস্ব মতবাদের গোষ্ঠি বা গ্রুপ।

ঘরের বসেই সারা বিশ্বে যোগাযোগের এমন অভিনব জনপ্রিয় পন্থা আগে দেখা মেলেনি। আর বিভিন্ন বাস্তবতার কারণে ঘরের বাইরে যাদের যাবার উপায় নেই, তাদের জন্য এ যেন এক স্বপ্নলোকের চাবি। চার দেয়ালের মাঝে বসেই পরিচয় করা সম্ভব শত শত মানুষের সাথে, দেশে ও বিদেশে। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এমন অনেক নতুন নতুন বন্ধু গড়ে তোলেন, সারাজীবনেও হয়তো যাদের সাথে কথা বলার সুযোগই হতো না।

আসুন, আমরা বাংলাদেশের এমনই একটি ব্যাতিক্রমী ফেসবুক-গ্রুপের কথা শুনি, যারা প্রতিবন্ধীদের মৌলিক মানবিক অধিকার আদায়ে জনসচতনতা গড়ে তোলার একটি প্রাথমিক পন্থা হিসাবে অন্তর্জালকে বেছে নিয়েছে।

প্রতিবন্ধীদের স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন ফেসবুকে বি-স্ক্যান (Bangladeshi Systems Change Advocacy Network, B-SCAN) নামে একটি গ্রুপ খোলার মাধ্যমে সংগঠনের যাত্রা শুরু করে। এরই মধ্যে গ্রুপটি অনেকের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। ২০০৯ সালের ১৭ জুলাই এই গ্রুপটি খোলার পর এর সদস্য সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে তিন হাজারে।

প্রতিবন্ধীদের মর্যাদাবান মানুষ হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠা পেতে তাদের মাঝে আত্নবিশ্বাস গড়ে তোলার একটি সূচনা পর্ব গ্রুপটি করে চলেছে। এটি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সমমনারা সহজেই একত্রিত হতে পারেন, সংগঠনের নানা প্রায়গিক কর্মসূচিতেও যোগ দিতে পারেন।

বি-স্ক্যান'র মুল স্লোগান 'সর্বত্র প্রবেশের সুবিধা চাই' এর শ্লোগানটির ব্যাপকতা হচ্ছে, সংস্থাটি চায় -- প্রতিবন্ধীদের যেনো শিক্ষা, চাকরি, যাতায়াত, বাসস্থান, বিনোদন ইত্যাদি সর্ব ক্ষেত্রে সহজগম্যতা তথা অধিকার অর্জিত হয় আর এ জন্য বাংলাদেশে যেনো গড়ে ওঠে একটি মানবিক সমাজ ব্যবস্থা, যেখানে একজন প্রতিবন্ধী যেনো নিজেকে সাবলম্বী হিসাবে গড়ে তুলতে পারেন

বি-স্ক্যান এ-ও মনে করে, শুধু ফেসবুক বা অন্তর্জালে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেই ওই রকম সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখা সম্ভব নয় কারণ দেশের অধিকাংশ মানুষই তথ্য-প্রযুক্তির সুবিধা বঞ্চিত এর পরেও দেশের সচেতন শিক্ষিত সমাজের একটা অংশ এখানেই আছেন তাদের চেতনাটিকেও জাগ্রত করা প্রয়োজন; তাই অন্তর্জালের উদ্যোগটিকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই সংস্থাটির প্রথম পদক্ষেপ -- প্রতিবন্ধীদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করা

বি-স্ক্যান আহ্বান জানায়, আসুন, আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাধ্যমত প্রতিবন্ধীদের পাশে এসে দাঁড়াই। তাদের প্রতি বাড়িয়ে দেই সহমর্মিতার হাত।

আমাদের লক্ষ্য

'বি-স্ক্যান' একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর মূল লক্ষ্য প্রতিবন্ধীদের মৌলিক মানবিক অধিকার সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা এবং একই সঙ্গে প্রতিবন্ধীদেরও এই অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ ভাগ, অর্থাৎ প্রায় দেড় কোটি মানুষ নানাভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার; ১৯৮৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) এই জরীপের পর অবশ্য কোনো জরীপ হয়নি। বিভিন্ন দেশে এই সংখ্যা কিছু কম বা বেশি। এদেশে অবহেলিত এই মানুষগুলোর শতকরা ৮০ ভাগই বাস করে দারিদ্রসীমার নীচে। আর এ কারণেই তাদের অধিকারগুলো রক্ষার বিষয়ে তেমন জোরালো কোনো ভূমিকা নেই।

কারা এই প্রতিবন্ধী?

জন্মগত বা মানসিক বা অসুস্থতার কারণে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে শারীরিক বা মানসিকভাবে যারা বাধাগ্রস্থ হয় বা একেবারেই পারে না, তারাই প্রতিবন্ধী।

অবশ্য প্রতিবন্ধকতার অনেক রকম সঙ্গা রয়েছে; প্রতিবন্ধকতার ভিন্নতাও অনেক।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও তাদের মৌলিক অধিকার পূরণে সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা উচিত বলে আমরা মনে করি।

আমাদের লক্ষ্য, এদেশে সব প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য আগামী এক দশকে গণজাগরণ সৃষ্টি করে প্রতিবন্ধীদের জন্য মানবিক সমাজ গঠনে কার্যকর উদ্যোগী ভূমিকা রাখা। এ জন্য সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব পরিবর্তন প্রয়োজন, সেদিকে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

আমরা যা দেখতে চাইঃ

প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য একটি সুন্দর মানবিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠুক।

আমরা যা করতে চাইঃ

প্রধানত তিনটি কাজের মাধ্যমে সকল প্রতিবন্ধী মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করতে চাই।

সচেতনতা সৃষ্টি,

অধিকার সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা গড়ে তোলা

এবং

প্রতিবন্ধী মানুষের স্বার্থ রক্ষা

যেভাবে করতে চাইঃ

মূলত: চারটি বিষয় প্রতিবন্ধী মানুষের সামাজিক মর্যাদা বাড়াতে প্রধান ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছি।

শিক্ষা,
কর্মসংস্থান,
সহায়ক যাতায়াত,
এবং
সর্বত্র প্রবেশের সুবিধা

প্রতিবন্ধিতা কি আমাদের অভিশাপ


আমার মা সব কিছুতেই একটু বেশি বেশি দুশ্চিন্তা করেন নিজে অস্থির হয়ে পড়েন এবং ক্রমশ সেই অস্থিরতাকে অতি দক্ষতার সাথে আশেপাশে অন্যান্যদের মাঝে সংকক্রমিত করেন তার বড় মেয়ে হওয়ার দরুন এই দু’টো গুণ আমার মধ্যে চমৎকার ভাবে গেড়ে বসেছে খুব ছোটখাট সমস্যাতেও অতি মাত্রায় অস্থির হয়ে পড়ি আমি

ইদানিং আমার অতি আদরের একমাত্র ছোট্ট বোন তাসনিন সুলতানা নীলাকে নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি
বেশ ক’দিন ধরে কোন কাজেই ভালো করে মন বসাতে পারছি না শরীর-মন কোনটাই ভালো নেই অবশ্যি এবারের সমস্যটি এতো ছোটখাটও নয় নীলা এবার সপ্তমশ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উঠতে যাচ্ছে এবং অষ্টম শ্রেণীকক্ষটি পড়েছে স্কুল ভবনের দোতলায় অভিভাবকগণের জন্যে এটি কোনভাবেই সমস্যা হতে পারে না! কিন্তু ওর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বাবা মাকে বিশেষভাবে ভাবায় সব কিছুতেই আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতোই এটিতেও নেই কোন র‌্যাম্প অথবা লিফটের সুব্যবস্থা

গতবছরের শুরুতে এরচে’ বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো ওকে নিয়ে
কোন স্কুল কতৃপক্ষই ওকে ভর্তি করাতে রাজী হচ্ছিলেন না কেউ কেউ পরামর্শ দিচ্ছিলেন ওকে বিশেষ স্কুলে ভর্তি করানোর জন্যে নীলা শুধু মাত্র স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারে না কিন্তু ওর চিন্তাশক্তি আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতোই সচল পরীক্ষায় প্রথম হতে না পারলেও বরাবরই ভালো রেজাল্ট করেছে, সবসময়ে প্রথম ছ’-সাতজনের মধ্যে থেকেছে এইটুকুন বয়সেই এত ভালো ইংলিশ রপ্ত করেছে আমি নিজেই মাঝে মাঝে অবাক হয়ে উঠি জেনে বুঝে কেউ বিশেষ করে তিনি যদি হয়ে থাকেন একজন ’মানুষ গড়ার কারিগর’ এমন কথা কিভাবে উচ্চারিত হতে পারে তার কন্ঠে আমি আজ অব্দি বুঝে উঠতে পারলাম না!


বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অবশেষে ’চট্টগ্রাম রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ’টির হালিশহরে অবস্থিত শাখার মহানুভব উপাধ্যক্ষ নীলাকে ভর্তি করাতে সম্মতি জানান
সপ্তম শ্রেণীকক্ষটি ছিলো দ্বোতলায় নীলার জন্যে সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠা কষ্টসাধ্য শুনে তিনি নিচতলায় বাথরুম সংলগ্ন একটি কেক্ষ নামিয়ে আনেন সপ্তম শ্রেণীকটি শুধুমাত্র নীলার সুবিধার্তে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেন শিক্ষক-শিক্ষীকাসহ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল কর্মচারিগন

বছরশেষে আবারো আমার মায়ের চিন্তা- অষ্টম শ্রেণীকক্ষটি দ্বোতলায়, ”কতৃপক্ষ কি একজন ছাত্রীর জন্যে প্রতি বছর বিশেষ ছাড় দেবে!?” বার্ষিক পরীক্ষা শেষে উপাধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে মা জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতি বছর বাচ্চারা একি ক্লাসরুমে পড়তে চায় না
আতঙ্কে আমি ভীষণ অস্থির হয়ে পড়ি কারণ মায়ের চিন্তা স্কুলকতৃপক্ষ যদি শ্রেণীকক্ষ নিচতলায় নামিয়ে না আনেন নীলাকে ঘরেই শিক্ষক রেখে পড়াবেন আর স্কুলের চাপ থেকে দূরে সরে গিয়ে ঘরে পড়ালোখার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে তা আমারচে’ ভালো কে জানে!

”মাসকুলার ডিসট্রফি” নামক অসুখটি যখন ছোট্ট নীলার শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ে তখন থেকেই আমি সবসময়ে একটা আতঙ্কের মাঝে থাকি
। প্রতিমুহুর্তে মনে হতে থাকে এই বুঝি আমার জীবনের নিকষ কালো ছায়া ওর ওপরে এসে পড়লো....এই সব ছোটখাট সমস্যার কারণে আমার পড়ালেখাও সেই ছোট্টবেলায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো নীলাকেও যেনো একি পথের পথিক হতে না হয় ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন আছে.... সবার মতোই পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ের নিচে শক্তভিত্তি তৈরি করবে আমি যা করতে পারিনি ও তা করে দেখাবে!

গত একমাস চরম দুশ্চিন্তায় কাটানোর পর অবশেষে উপাধ্যক্ষ মহদোয় রাজী হন শ্রেণীকক্ষ নিচতলায় নামিয়ে আনতে
অষ্টম শ্রেণীতে নীলাকে ভর্তি করানোর পর এখন একটু শান্তি কিন্তু এভাবেও আর কতদিন! এই স্কুলে যতদিন আছে ততদিন হয়তো নিশ্চিন্ত তারপর? অন্য কোথাও ওকে ভর্তি করানো যাবে তো!
যতদিন যাবে ওর শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হবে
এখনো ও নিজে হাঁটতে পারছে আর ক’দিন বাদে সেটাও সম্ভব হবে না, তখন? কোলে করে সবার সামনে দিয়ে ওকে আনা নেওয়ার সময়ে মানুষের তির্যক চাউনি এবং সেই সাথে কটু মন্তব্য যে কতটা ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক! সাধারণ মানুষ যদি এর মর্ম কিছুটা বুঝতো! এই অবস্থার কি কোন পরিবর্তন নেই?

প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প হলেও কিছু বিশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে আর তা হলো অন্ধ প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে ব্রেইল পদ্ধতির বিশেষ ব্যবস্থা, বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্যে ইশারাভাষা পদ্ধতি এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধি শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হতে কিংবা তাদের বেড়ে উঠার স্বাভাবিক পরিবেশ গড়ে তোলার ল্েক্ষয রয়েছে বেশ কিছু বিশেষ বিদ্যা নিকেতন
কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুরা না পারে বিশেষ স্কুলে যেতে না পায় স্বাভাবিক স্কুলে যাওয়ার যথাযথ পরিবেশ আমাদের দেশের মানুষের মাঝে একটা ধারনা বদ্ধমূল প্রতিবন্ধি শিশুরা বিশেষ স্কুল ছাড়া স্বাভাভিক স্কুলে অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে পড়তে পারবে না এই ধারনাটি একেবারেই ভুল শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুদের শুধুমাত্র সর্বোচ্চ প্রবেশের সুবিধেটুকু প্রয়োজন হয় আলাদা শিক্ষাব্যবস্থা নয় লিফটের সুব্যবস্থা না থাকলেও শারীরিক প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নিশ্চিত করতে স্বল্প খরচে র‌্যাম্প বা ঢালু পথ এবং বাথরুম সংলগ্ন একটি শ্রেণীকক্ষ যদি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরি করা যায় হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্যে অতি সহজেই প্রবেশগম্যতা তৈরি হয় আমার জানা মতে সরকারি কিছু সংখ্যাক স্কুল এবং ঢাকায় দু’একটি বেসরকারি স্কুলে ছাড়া কোথাও র‌্যাম্প নেই আমাদের দেশে শুধুমাত্র স্বাভাবিক প্রবেশগম্যতা নেই বলে শারীরিক প্রতিবন্ধি শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বঞ্চিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন যাপনের আনন্দ থেকে

তবুও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো এগিয়ে এলো আমাদের দুঃশ্চিন্তামুক্ত করতে!

আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ’বি-স্কেন’এর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞচিত্তে ধন্যবাদ জানাই স্কুল কর্তৃপক্ষসহ প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত সকলকে
একবুক আশা নিয়ে প্রত্যাশা করি দেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে নীলার মতো হাজারো শিশুর জন্যে শিক্ষার পরিবেশ উন্মুক্ত করবে

লেখকঃ সাবরিনা সুলতানা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৯।
sabrina@b-scan.org

আমরা তোমাদেরই একজন

বেশ কিছুদিন আগে এক সন্ধ্যায় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে দেখতে গিয়েছিলাম প্রতিবন্ধী শিশুদের আয়োজনে এক ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক উৎসব। সারাদিনের বৈরী আবহাওয়ায় অনিশ্চিয়তার মাঝে দোদুল্যমান থেকে অবশেষে সেখানে পৌঁছুতে পেরে ভীষণ ভাল লাগছিল। এদেশের একজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী হওয়ার অভিশাপে জীবনের সিংহভাগ চলে গেছে চারদেয়ালের মাঝে বন্দী থেকে। তাই এই প্রথম সামনা-সামনি কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার উত্তেজনা একটু বেশীই ছিল।


শুরুতেই বক্তব্য রাখলেন বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার নেতারা। শুনতে ভালই লাগলো তাদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতার আলোয় অলংকৃত কিছু কথা,বক্তব্য। মন্ত্রীমহদয়ের বক্তব্যটি অবশ্য শুনতে হল অনুষ্ঠানের মাঝে,কারণ উনার সংসদ শেষ করে এসে পৌঁছতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল। অনেক শিশুই দেখলাম আয়োজনে, যাদের দেখলেই বুকের ভিতরটি হু হু করে উঠে। এ যেন এক অন্য জগৎ,তাদের কেউ হয়তো দেখেনি এই পৃথিবীর স্বাভাবিক রূপ-রস- আলো। আবার কেউ হয়তো এক সময় অন্য আরো দশটি শিশুর মতোই স্বাভাবিকভাবে জন্মেছিলো, বেড়ে উঠছিলো; কিন্তু কোন দূ্র্ঘটনা বা অসুস্থতা কেড়ে নিয়েছে তাদের দু’চোখের আলো বা করে দিয়েছে তাদের চলৎ শক্তিহীন। আর একদল যাদের কলকালিতে মুখর হবার কথা চারিদিক অথচ তারা কথা বলছে ইশারা ভাষায়,কারণ তারা কথা বলতে পারে না, শুনতে পারে না নিজের গাওয়া গানটিও বা জানে না যেই ছন্দে তারা নেচে যাচ্ছিল সেটিই বা কোন সুর মূর্ছনায় ঝংকিত হচ্ছে? বুদ্ধী প্রতিবন্ধী বা অটিস্টিক শিশুগুলো কি ওদের জগত থেকে বেড়িয়ে আসতে পারছিল? যেই ফুটফুটে শিশুগুলো বসে ছিল হুইলচেয়ারে, কেমন লাগছিলো ওদের, যখন ওদেরই সমবয়সী কিছু শিশু ছুটে বেড়াচ্ছিল মিলনায়তন জুড়ে? আরও অনেক ধরণের প্রতিবন্ধী শিশু সেখানে ছিল যাদের বর্ণনা দেবার ভাষা আমার ঠিক জানা নেই।

এই দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের ঘরের বাইরে একা একা চলাফেরা করা দুঃসাধ্য। বিশেষ করে যারা শারীরিক প্রতিবন্ধী মানুষ, কোথাও বেরুলে বা কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে প্রথমেই বিপত্তি ঘটে হুইলচেয়ারের জন্য ঢালু যে চলার পথ থাকা প্রয়োজন, সেটি নিয়ে। একেকটি সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে হুইল চেয়ার সমেত একা বা কোনো সাহায্যকারী নিয়ে অনুষ্ঠানে যাওয়া ঠিক কতটুকু কষ্টসাধ্য তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বোঝা অনেকটাই দু:সাধ্য। তো গত মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর পাবলিক লাইব্রেরির ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছিলো ন্যাশনাল ফোরাম অব অর্গনাইজেশেনস ওয়ার্কিং উইথ দ্য ডিসএবেল্ড (এন,এফ,ও,ডব্লিউ,ডি) নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। 'শিশু শিক্ষা সপ্তাহ' উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক শিশু মিলনমেলা। উদ্দেশ্য যদিও ছিল প্রতিবন্ধী শিশুদের সাথে যারা প্রতিবন্ধী নয়, এমন শিশুদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া, কিন্তু নিজেদের মাঝে ভাব বিনিময়ের কোন সুযোগ এই শিশুদের ঘটে নি, আশা করছি ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই হবে, আর তাহলেই এই অনুষ্ঠানগুলো আরও বেশী সাথর্ক হয়ে উঠবে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ এসেছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) গোষ্ঠীর সকল সদস্যসহ আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম সেখানে। একটু আগে প্রতিবন্ধীদের সহজেই চলাফেরার যে বাধা-বিপত্তিটুকুর কথা বলছিলাম, সম্ভবত এ কারণেই ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের মধ্যে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ছিলো তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কারণ আমি দেখেছি মিলনায়তন পর্যন্ত পৌঁছুতে কিছু দূর পর পর দু’টি/তিনটি করে সিঁড়ি পাড় হতে হয়েছে,কিন্তু নেই কোন ঢালু পথ বা র‌্যাম্প (Ramp)। তাই আমারও লেগেছে তিন/চারজন সাহায্যকারী। ধন্যবাদ জানাই যারা আমায় সাহায্য করেছেন সেই সিঁড়িগুলো পার হতে। জানতে পারলাম, লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষ এই বছরের শেষে সেখানে র‍্যাম্প তৈরীর সিদ্ধান্ত ( বর্তমানে সেখানে র‍্যাম্প তৈরী হয়ে গেছে) নিয়েছেন। যদি সত্যিই তারা সেটা করেন তাহলে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের দেখে নিশ্চয়ই উৎসাহিত হবেন এই কাজে।

যাই হোক, উপভোগ করলাম প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিবেশিত নাচ,গান,কিছু বক্তব্যধর্মী নাট্যাংশ। একটি নাট্যাংশ আমার বিশেষ ভাল লেগেছে, যাতে তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুলে যাওয়ার ব্যপারটি। যেমন একই স্কুলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সাথে পড়তে গেলে শিক্ষকদের কি ধরণের প্রশিক্ষন থাকা প্রয়োজন এবং কি ধরণের সরঞ্জাম থাকা দরকার। আরও কিছু ব্যপারও এখানে তুলে আনা হয়েছে সুন্দরভাবে, যেমন সহপাঠীদের কেউ কেউ তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে, আবার কেউ কেউ তাদের বন্ধুও হচ্ছে। অনেক শিক্ষক তাদের পড়াতে বিরক্তবোধ করছেন, আবার অনেক শিক্ষক এক একজন প্রতিবন্ধীকে সাহায্য করার জন্য সহপাঠী ঠিক করে দিচ্ছেন। যে কথাটি আমাকে নতুনভাবে ভাবিয়েছে,তাহলো একজন প্রতিবন্ধী শিশুর সাথে কি করে একজন সাধারন ছাত্রের বন্ধুত্ত গড়ে উঠতে পারে। নাটকটির এক পর্যায়ে একজন ছাত্র বলে উঠে, ‘’ওরাতো (প্রতিবন্ধীরা) আলাদা স্কুলে পড়তে গেলেই পারে’’। তখন একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু চিৎকার করে উঠে, “না না আমরা আলাদা স্কুলে পড়তে চাই না। আমাদের আলাদা করে দিও না। আমরা তোমাদের সাথে পড়তে চাই।'' তখন আমি সত্যি চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নি। এ যেন আমাদেরই চাঁপা কান্নার বর্হির প্রকাশ। আমরা তো আসলেও আলাদা হতে চাই না। আমরা যে তোমাদেরই একজন।

- সালমা মাহবুব
১১ ডিসেম্বর ২০০৯, জনকন্ঠ।

জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়


গত ১৭ই অক্টোবার জাতীয় শিক্ষানীতি ২০০৯ খসড়া প্রতিবেদনের উপর প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো তে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল ‘’প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা নিয়ে ভাবনা’’। যাতে খসড়া নীতিমালায় কিছু পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। ধন্যবাদ দীবা হোসেন ও শাহরিয়ার হায়দার কে। আমি সকলের সুবিধার্থে নিবন্ধের মুল কথাগুলো তুলে ধরলাম।

বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের মূলত দুইভাগে ভাগ করা হয়।
১।মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার প্রতিবন্ধী এবং
২।গুরুতর প্রতিবন্ধী

মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার প্রতিবন্ধী (যেমন,শারীরিক প্রতিবন্ধী,দৃষ্টি প্রতিবন্ধী,বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী)রা সাধারন স্কুলেই পড়াশোনা করতে পারবে,যদিও বেশীর ভাগ মানুষই মনে করেন প্রতিবন্ধী মানেই তাদের আলাদা স্কুলে পড়তে হবে। বাংলাদেশের কয়টি স্কুল এই ব্যপারে উদ্যোগ নিচ্ছেন? কয়জন অভিভাবকই বা সচেতন এই ব্যপারে?
একই স্কুলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সংগে প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াশোনা করার জন্য কিছু ব্যবস্থার প্রয়োজন। যেগুলো হল-

ক. প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সমান অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার জন্য উপযোগী অবকাঠামো উপকরণ ও শিক্ষক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা।

খ.গবেষণালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, প্রতিবন্ধী শিশুদের একটি বড় অংশ শিক্ষার মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে পারে, যদি সঠিক সময়ে শনাক্তকরণ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। ৫+ বছর বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদী প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করা যেতে পারে, যাতে এই এক বছরে প্রাথমিক অবস্থায় শিশুটির প্রতিবন্ধীতা সনাক্ত করে,চিহ্নিত করা যায়। তবে এই ক্ষেত্রে যথাযথ শিক্ষক প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরী।

গ. প্রাথমিক শিক্ষা অংশে প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির বয়স ৬+ বাধ্যতামুলক করা হয়েছে । প্রতিবন্ধী শিশুর প্রতিবন্ধীতার মাত্রা অনুযায়ী তাদের বিকাশে বিলম্ব হতে পারে তাই,তাদের ক্ষেত্রে বয়সের ব্যপারটি প্রয়োজনবোধে নমনীয় করা যেতে পারে।

ঘ. প্রতিবেদনে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু দৃষ্টি ও অন্যান্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা সাধারণ বিদ্যালয়ে পড়ছে, তারা এ পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়তে পারে। দৃষ্টিগত সমস্যার কারণে তারা অনেক প্রশ্নের উত্তর (যেমন জ্যামিতিবিষয়ক প্রশ্ন) করতে পারবে না।তাই নিবন্ধে, পাবলিক পরীক্ষায় কতজন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, এর একটি রেকর্ড বোর্ডের কাছে রাখতে বলা হয়েছে এবং সে সংখ্যা অনুযায়ী বোর্ড প্রশ্নপত্রে ওই নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীর জন্য বিকল্প প্রশ্ন করতে বলা হয়েছে।

ঙ. নীতিমালায় অধ্যায় ১৮-তে রয়েছে—‘বিশেষ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষা, স্কাউট ও গার্ল গাইড এবং ব্রতচারী’। নিবন্ধে বলা হয়েছে এ অধ্যায়টি সম্পূর্ণ আলাদাভাবে ‘বিশেষ শিক্ষা’ শিরোনামে আসতে হবে। কারণ, বিশেষ শিক্ষা সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী শিক্ষাপদ্ধতি। এটা কখনোই অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে আসতে পারে না। এখানে তারাই অংশ নেবে, যারা গুরুতর প্রতিবন্ধিতার কারণে সাধারণ বিদ্যালয়ে অংশ নিতে পারছে না। এদের শিক্ষাব্যবস্থাটি হবে একই সঙ্গে আধুনিক ও প্রায়োগিক। ফলে স্বতন্ত্র একটি অধ্যায় হিসেবে এটিকে বিবেচনা করাই যুক্তিযুক্ত।

বিশেষ শিক্ষার সঙ্গে একীভূত শিক্ষাকে সমন্বয় করেও ১৮ নম্বর অধ্যায়ের শিরোনাম হতে পারে ‘একীভূত শিক্ষা ও বিশেষ শিক্ষা’।

চ.১৮ অধ্যায়ের আরো একটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর প্রয়োজনের কথা বলা হয়েছে। ওখানে অনেকবার ‘মানসিক সমস্যা’ কথাটি ব্যবহূত হয়েছে। ‘বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা’ ও ‘মানসিক সমস্যা’ কখনোই এক কথা নয়। এ কারণে ‘মানসিক সমস্যা’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা’ ব্যবহার করার প্রস্তাব করা হয়েছে নিবন্ধে। এ ছাড়া এ অধ্যায়ে ‘সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থা চালু’ করার কথা বলা হয়েছে; এর বদলে ‘একীভূত শিক্ষা’ শব্দগুলো ব্যবহার করাই শ্রেয়। ৫ নম্বর কৌশলে ‘বচন ও মানসিক প্রতিবন্ধী’ বলা হয়েছে; এর পরিবর্তে ‘ভাব প্রকাশ বা যোগাযোগ অক্ষমতা ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা’ ব্যবহারের প্রস্তাব করেছেন।

তবে গুরুতর মাত্রার প্রতিবন্ধীদের(যেমন, বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, অটিস্টিক) জন্য অবশ্যই বিশেষ স্কুল প্রয়োজন হবে।

জাতীয় শিক্ষা ২০০৯ খসড়া নীতি মালাটি সর্বসাধারণের সুপারিশের জন্য উন্মুক্ত রাখায় সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি,আশা করছি সুচিন্তিত মতামতের যথাযথ মূল্যায়ন হবে।

তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো 

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub