হুইলচেয়ারে বসে ল্যাপটপ কম্পিউটারে খুটখাট করতে করতে জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে একটি মেয়ে। উন্মুক্ত আকাশ দেখার বাসনায় দিনমান জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকে মেয়েটি। কিন্তু মেয়েটির সেই উন্মুক্ত আকাশ দেখার ক্ষণটি আর আসে না কিছুতেই। এভাবেই তার দিন কাটে, রাত যায়। মাস আসে, বছর ঘুরে ঘুরে যুগও পেরিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটির আকাশ দেখার অপেক্ষার প্রহর আর ফুরোয় না। ফুরাবে কী করে! মাসকুলার ডিসট্রোফি নামক ভয়ানক এক রোগ যে বাসা বেঁধেছে মেয়েটির শরীরে। ফলে ধীরে ধীরে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ক্ষয়ে যাচ্ছে। এভাবেই দিন কাটছে চট্টগ্রামের মেয়ে সাবরিনা সুলতানার।
শরীরে ভয়ানক রোগ নিয়েও থেমে নেই সাবরিনা সুলতানা। নিজের দিকে তাকিয়ে অপরের কষ্ট অনুভব করার চেষ্টা করেন তিনি। আর তাই তো নিরলসভাবে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
একসময় অন্য সবার মতোই সুস্থ-স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। স্কুল থেকে এসেই পাড়াময় দস্যিপনা করে বেড়াতেন। পাতাকুড়ানি খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে দুষ্টু প্রজাপতির পেছনে ঘুরে ঘুরে সময় কাটত তাঁর। তারপর বাসায় ফিরে মা আর যমজ ভাইদের সঙ্গে রাজ্যির কথার খই ফুটত তাঁর মুখে। মাঝে মাঝে ভাইদের সঙ্গে এটা-ওটা নিয়ে একটা হল্লাও বাধিয়ে ফেলতেন বাসায়। ছেলেবেলায় এমনই ছিলেন সাবরিনা। কিন্তু সেই সোনারঙা দিনগুলো খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ, সেই ছেলেবেলায় সাবরিনার জীবনাকাশ ছেয়ে যায় মাসকুলার ডিসট্রোফি নামক ঘন কালো মেঘে। সেই মেঘ সরানোর পথ জানা নেই কারও।
১৯৮৯ সাল। বয়স কেবল সাত। মা আফরোজা আকতার সাবরিনাকে নিয়ে গোসল করাতে ঢুকেছেন গোসলখানায়। গোসল শেষে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে সাবরিনা হঠাৎ বুঝতে পারলেন নিজে থেকে আর দাঁড়াতে পারছেন না তিনি। প্রথমে দুষ্টুমি ভাবলেও মেয়ের মুখের ভাব দেখে মা-ও বুঝতে পারলেন, কিছু একটা হয়েছে। এরপর শুরু হলো চিকিৎসার পালা। না, কিছুতেই কিছু হয় না। মেয়েকে সুস্থ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবা আবদুস সবুর ও মা আফরোজা। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি থেকে শুরু করে তাবিজ-কবজ-ঝাড়ফুঁক কোনো কিছুই বাদ দিলেন না। অতঃপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাদাৎ হোসেন প্রথম রোগটির নাম আবিষ্কার করলেন—মাসকুলার ডিসট্রোফি। এ রোগে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়। সাবরিনার রক্তের সিপিকে (ক্রিয়েটিন ফসফোকাইনেজ) পরীক্ষা করা হলো। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তে সিপিকের মাত্রা থাকে ১৬৭। কিন্তু সাবরিনার শরীরে তত দিনে তা দাঁড়িয়ে গেছে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। গোটা বিশ্বে এ রোগের কোনো ওষুধ আজ অবধি আবিষ্কৃত হয়নি।
এরপর সাবরিনার রক্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হলো। কিন্তু কোথাও কোনো সমাধান পাওয়া গেল না। সবচেয়ে মর্মান্তিক ব্যাপার হলো, সে সময় চিকিৎসকেরা সাবরিনার আয়ুষ্কাল বেঁধে দিয়েছিলেন ১৩-১৪ বছর।
১৯৯৭ সালে সাবরিনা এক বছরের জন্য বাবার সঙ্গে পাড়ি জমালেন মালয়েশিয়ায়। কিন্তু সেখানেও হতাশ হতে হলো!
একসময় সাবরিনাও জানতে পারলেন, তিনি আর কোনোদিন অন্যদের মতো স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবেন না।
সেই ঘাতক ব্যাধির কারণেই একসময় স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায় সাবরিনার। ধনুকের মতো শরীর বাঁকা হয়ে যায়। চলল বাসায় বসে পরীক্ষা দেওয়া। কিন্তু সেটাও আর বেশি দিন স্থায়ী হলো না। পঞ্চম শ্রেণীতেই তাঁকে ইস্তফা দিতে হলো পড়ালেখায়। আর কোনোদিন পড়ালেখা করতে পারবেন না ভেবে বুকের ভেতর গুমরে উঠত কান্না। তাই বলে নিজের ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানতে নারাজ সাবরিনা। বাসায় বসে একা একাই শুরু করলেন বিভিন্ন ধরনের বই আর পত্রপত্রিকা পড়া। এভাবেই চার দেয়ালের মধ্যে বসে কেটে গেল কয়েক বছর।
সাবরিনা বললেন, ‘শুনেছি, যেদিন দুই চোখ মেলে প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম, সেদিনই বাবা আমায় কোলে নিয়ে নাম রেখেছিলেন ‘সাবরিনা’। তবে সাত বছর বাদে সমাজ আমার নতুন নামকরণ করল, ‘প্রতিবন্ধী’। তাই আমার প্রাণবন্ত উচ্ছলতা কোথায় যেন হারিয়ে গেল! বন্দী হয়ে পড়লাম চার দেয়ালের মাঝে।’
এবার আর বসে থাকা নয়। বাঁচার জন্য লড়তে হবে। তাই শুরু করলেন সমাজের প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় লেখালেখি। লেখালেখির মাধ্যমেই পরিচয় চট্টগ্রামের সাংবাদিক রিয়াজ হায়দারের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরেই প্রণয়, প্রণয় থেকে ঘর বাঁধা। নতুন ঘরে এসে সাবরিনা আরও বেশি স্বাধীনতা পেলেন। ঠিক যেমনটা চেয়েছিলেন তিনি।
তবে হঠাৎ করে আবারও একটি সংবাদ সাবরিনার মনটাকে ভারী করে তোলে। জানতে পারলেন একমাত্র ছোট বোন তাসনীন সুলতানা নীলার শরীরেও বাসা বাঁধছে ওই ভয়ংকর রোগ এবং তাঁর মতোই সমাজের উপেক্ষার শিকার হতে হলো তাঁকে। এ সবকিছু দেখে সাবরিনা আর বসে থাকলেন না। নিজেকে প্রশ্ন করলেন, আর কত পিছিয়ে থাকবে প্রতিবন্ধীরা? তাঁদেরও অধিকার আছে মানুষের মতো বেঁচে থাকার। আর এ জন্য প্রয়োজন মানুষকে সচেতন করে তোলা।
ঠিক এমনি সময় বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে খুঁজে পেলেন ইন্টারনেট। শুরু করলেন বাংলা ব্লগগুলোতে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে লেখালেখি। এরপর যোগ দিলেন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে। ফেসবুকে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে উঠেপড়ে লেগে গেলেন তিনি।
২০০৯ সালের ১৭ জুলাই, ফেসবুকে নানা পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি গ্রুপ খুললেন সাবরিনা। নাম—‘বাংলাদেশ সিস্টেমস চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক’ (বি-স্ক্যান)। সব ধরনের প্রতিবন্ধীকে নিজস্ব কথা বা তাঁদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরাই এর কাজ। আর সেই গ্রুপে যোগ দিল দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অনেক মানুষ।
এই গ্রুপ চায়, নিজেদের অবস্থান থেকে প্রত্যেকে যেন নিজে সচেতন হয়ে অন্যদের সচেতন করে তোলার কাজটি করে। বহু বছর পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন বি-স্ক্যানকে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যেতে। প্রতিবন্ধীদের পক্ষে কথা বলতে যোগ দিয়েছিলেন চ্যানেল আইয়ের গ্রামীণফোন তৃতীয়মাত্রার অনুষ্ঠানেও।
এখন আর শুধু মানুষকে সচেতন করে তোলাতেই সীমাবদ্ধ নয় সাবরিনাদের বি-স্ক্যান। যেখানেই কোনো প্রতিবন্ধীর দুঃখের কথা শুনেছেন, সেখানেই ছুটে গেছেন বি-স্ক্যানের প্রতিনিধি। এই সাহসী মানুষটি আমাদের সবার কাছেই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সাবরিনা নিশ্চয়ই থেমে থাকবেন না। তিনি তো অপরাজিতা!
সুত্রঃ আবু হেনা, ২০ ডিসেম্বর, প্রথম আলো
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-15/news/115871
শরীরে ভয়ানক রোগ নিয়েও থেমে নেই সাবরিনা সুলতানা। নিজের দিকে তাকিয়ে অপরের কষ্ট অনুভব করার চেষ্টা করেন তিনি। আর তাই তো নিরলসভাবে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
একসময় অন্য সবার মতোই সুস্থ-স্বাভাবিক ছিলেন তিনি। স্কুল থেকে এসেই পাড়াময় দস্যিপনা করে বেড়াতেন। পাতাকুড়ানি খেলার সঙ্গীদের সঙ্গে দুষ্টু প্রজাপতির পেছনে ঘুরে ঘুরে সময় কাটত তাঁর। তারপর বাসায় ফিরে মা আর যমজ ভাইদের সঙ্গে রাজ্যির কথার খই ফুটত তাঁর মুখে। মাঝে মাঝে ভাইদের সঙ্গে এটা-ওটা নিয়ে একটা হল্লাও বাধিয়ে ফেলতেন বাসায়। ছেলেবেলায় এমনই ছিলেন সাবরিনা। কিন্তু সেই সোনারঙা দিনগুলো খুব বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ, সেই ছেলেবেলায় সাবরিনার জীবনাকাশ ছেয়ে যায় মাসকুলার ডিসট্রোফি নামক ঘন কালো মেঘে। সেই মেঘ সরানোর পথ জানা নেই কারও।
১৯৮৯ সাল। বয়স কেবল সাত। মা আফরোজা আকতার সাবরিনাকে নিয়ে গোসল করাতে ঢুকেছেন গোসলখানায়। গোসল শেষে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে সাবরিনা হঠাৎ বুঝতে পারলেন নিজে থেকে আর দাঁড়াতে পারছেন না তিনি। প্রথমে দুষ্টুমি ভাবলেও মেয়ের মুখের ভাব দেখে মা-ও বুঝতে পারলেন, কিছু একটা হয়েছে। এরপর শুরু হলো চিকিৎসার পালা। না, কিছুতেই কিছু হয় না। মেয়েকে সুস্থ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বাবা আবদুস সবুর ও মা আফরোজা। অ্যালোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি থেকে শুরু করে তাবিজ-কবজ-ঝাড়ফুঁক কোনো কিছুই বাদ দিলেন না। অতঃপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাদাৎ হোসেন প্রথম রোগটির নাম আবিষ্কার করলেন—মাসকুলার ডিসট্রোফি। এ রোগে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যায়। সাবরিনার রক্তের সিপিকে (ক্রিয়েটিন ফসফোকাইনেজ) পরীক্ষা করা হলো। সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের রক্তে সিপিকের মাত্রা থাকে ১৬৭। কিন্তু সাবরিনার শরীরে তত দিনে তা দাঁড়িয়ে গেছে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। গোটা বিশ্বে এ রোগের কোনো ওষুধ আজ অবধি আবিষ্কৃত হয়নি।
এরপর সাবরিনার রক্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো হলো। কিন্তু কোথাও কোনো সমাধান পাওয়া গেল না। সবচেয়ে মর্মান্তিক ব্যাপার হলো, সে সময় চিকিৎসকেরা সাবরিনার আয়ুষ্কাল বেঁধে দিয়েছিলেন ১৩-১৪ বছর।
১৯৯৭ সালে সাবরিনা এক বছরের জন্য বাবার সঙ্গে পাড়ি জমালেন মালয়েশিয়ায়। কিন্তু সেখানেও হতাশ হতে হলো!
একসময় সাবরিনাও জানতে পারলেন, তিনি আর কোনোদিন অন্যদের মতো স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবেন না।
সেই ঘাতক ব্যাধির কারণেই একসময় স্কুলে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যায় সাবরিনার। ধনুকের মতো শরীর বাঁকা হয়ে যায়। চলল বাসায় বসে পরীক্ষা দেওয়া। কিন্তু সেটাও আর বেশি দিন স্থায়ী হলো না। পঞ্চম শ্রেণীতেই তাঁকে ইস্তফা দিতে হলো পড়ালেখায়। আর কোনোদিন পড়ালেখা করতে পারবেন না ভেবে বুকের ভেতর গুমরে উঠত কান্না। তাই বলে নিজের ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানতে নারাজ সাবরিনা। বাসায় বসে একা একাই শুরু করলেন বিভিন্ন ধরনের বই আর পত্রপত্রিকা পড়া। এভাবেই চার দেয়ালের মধ্যে বসে কেটে গেল কয়েক বছর।
সাবরিনা বললেন, ‘শুনেছি, যেদিন দুই চোখ মেলে প্রথম পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম, সেদিনই বাবা আমায় কোলে নিয়ে নাম রেখেছিলেন ‘সাবরিনা’। তবে সাত বছর বাদে সমাজ আমার নতুন নামকরণ করল, ‘প্রতিবন্ধী’। তাই আমার প্রাণবন্ত উচ্ছলতা কোথায় যেন হারিয়ে গেল! বন্দী হয়ে পড়লাম চার দেয়ালের মাঝে।’
এবার আর বসে থাকা নয়। বাঁচার জন্য লড়তে হবে। তাই শুরু করলেন সমাজের প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে স্থানীয় পত্রিকায় লেখালেখি। লেখালেখির মাধ্যমেই পরিচয় চট্টগ্রামের সাংবাদিক রিয়াজ হায়দারের সঙ্গে। পরিচয়ের সূত্র ধরেই প্রণয়, প্রণয় থেকে ঘর বাঁধা। নতুন ঘরে এসে সাবরিনা আরও বেশি স্বাধীনতা পেলেন। ঠিক যেমনটা চেয়েছিলেন তিনি।
তবে হঠাৎ করে আবারও একটি সংবাদ সাবরিনার মনটাকে ভারী করে তোলে। জানতে পারলেন একমাত্র ছোট বোন তাসনীন সুলতানা নীলার শরীরেও বাসা বাঁধছে ওই ভয়ংকর রোগ এবং তাঁর মতোই সমাজের উপেক্ষার শিকার হতে হলো তাঁকে। এ সবকিছু দেখে সাবরিনা আর বসে থাকলেন না। নিজেকে প্রশ্ন করলেন, আর কত পিছিয়ে থাকবে প্রতিবন্ধীরা? তাঁদেরও অধিকার আছে মানুষের মতো বেঁচে থাকার। আর এ জন্য প্রয়োজন মানুষকে সচেতন করে তোলা।
ঠিক এমনি সময় বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে খুঁজে পেলেন ইন্টারনেট। শুরু করলেন বাংলা ব্লগগুলোতে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে লেখালেখি। এরপর যোগ দিলেন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে। ফেসবুকে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে উঠেপড়ে লেগে গেলেন তিনি।
২০০৯ সালের ১৭ জুলাই, ফেসবুকে নানা পেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি গ্রুপ খুললেন সাবরিনা। নাম—‘বাংলাদেশ সিস্টেমস চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক’ (বি-স্ক্যান)। সব ধরনের প্রতিবন্ধীকে নিজস্ব কথা বা তাঁদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরাই এর কাজ। আর সেই গ্রুপে যোগ দিল দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অনেক মানুষ।
এই গ্রুপ চায়, নিজেদের অবস্থান থেকে প্রত্যেকে যেন নিজে সচেতন হয়ে অন্যদের সচেতন করে তোলার কাজটি করে। বহু বছর পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন বি-স্ক্যানকে আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যেতে। প্রতিবন্ধীদের পক্ষে কথা বলতে যোগ দিয়েছিলেন চ্যানেল আইয়ের গ্রামীণফোন তৃতীয়মাত্রার অনুষ্ঠানেও।
এখন আর শুধু মানুষকে সচেতন করে তোলাতেই সীমাবদ্ধ নয় সাবরিনাদের বি-স্ক্যান। যেখানেই কোনো প্রতিবন্ধীর দুঃখের কথা শুনেছেন, সেখানেই ছুটে গেছেন বি-স্ক্যানের প্রতিনিধি। এই সাহসী মানুষটি আমাদের সবার কাছেই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সাবরিনা নিশ্চয়ই থেমে থাকবেন না। তিনি তো অপরাজিতা!
সুত্রঃ আবু হেনা, ২০ ডিসেম্বর, প্রথম আলো
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-15/news/115871