Wheelchair Distribution


On Saturday, 27 November,2010 in a simple program Bangladeshi Systems Change Advocacy Network (B-SCAN) distributed wheelchairs to two persons with disability by the financial support of  Rotary Club of  Dhaka Central. Dhaka Central’s president Lt.Gen (rtd) Harun Ar Rashid and the First Lady Mrs. Harun Ar Rashid was the chief guest of the program. As it was the Women’s Day of the club so maximum female member was present on that occasion. Including Rotarian Commodore (rtd) Ataur Rahman , Rotarian  M. Quasim and Lt. Gen (rtd)  Masud Ali khan there were other Rotarians.




Whom the two wheelchairs  were presented, one of them named Zorgina Begum, her Father was Late Mr. Abdul Aziz Akond and Mother Hosneara Begum. Zorgina has physical disability since she had an accident at her 13 years of age. She has to wear brace to her both legs and walks with a stick. But it is difficult to wear those for a longer period of time. So she needed a alternate way for her movement.

Another person was Nigar Sultana Sumi, her Father is Safi Uddin Ahmed and Mother Ayesha Ahmed. Sumi is a polio victim since her childhood. It is not at all possible for her to move without a wheelchair. B-SCAN stood beside these two persons.

On behalf of B-SCAN General Secretary  Salma Mahbub, Treasurer Oronno Anam and Volunteers Kazi Anwar, Koushik and Onirban was present on that program.

আমরা করব জয়...

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারী। এ হিসাব মতে, প্রতিবন্ধী নারীর সংখ্যা পঁচাত্তর লাখের বেশি। তাদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারী শারীরিক বা মানসিক অথবা উভয় নির্যাতনের শিকার হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ এবং ২৮ ধারায় বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠীকে সমান হিসেবে দেখানো হলেও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে পঙ্গু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ জাতীয় সব উন্নয়ন নীতি ও পরিকল্পনায় প্রতিটি প্রতিবন্ধী নারীরও রয়েছে অধিকার। তাই প্রতিবন্ধী নারীকে কৃপা, অনুকম্পা নয়; তাদের সুযোগ ও অধিকার আদায়ের পথটি করে দিতে হবে আমাদেরই। লিখেছেন রীতা ভৌমিক

আশরাফুন নাহার মিষ্টি

লাভলী খাতুন
সমন্বয়কারী, প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন শাখা
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি
 

একটি দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছে আশরাফুন নাহার মিষ্টির জীবনধারা। ভাগ্যকে দায়ী করে থেমে থাকেননি তিনি। অত্যন্ত পরিশ্রম, নিষ্ঠার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে গেছেন জীবন নামের চাকাটিকে। তিনি জন্মগত প্রতিবন্ধী নন। তার শৈশব, কৈশোর কেটেছে অন্য স্বাভাবিক মেয়েদের মতোই দুরন্তপনার মধ্য দিয়ে। স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে সুনামও কুড়িয়েছেন। চিকিৎসক বাবা এবং সুগৃহিণী মায়ের নবম সন্তান তিনি। দশ ভাইবোনের সংসারে স্নেহ আদর ভালোবাসায় কেটেছে তার দিনগুলো। যশোরের ঝিকরগাছা থানা সদরে তাদের বাড়ি। ঝিকরগাছা পাইলট গার্লস স্কুল থেকে ১৯৯২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় স্টার মার্ক নিয়ে উপজেলায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম হন। মেয়ের এ সাফল্যে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে খুশির বন্যা বয়ে যায়। এ আনন্দ বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি তার পরিবার। বাড়ির তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে মিষ্টির মেরুদন্ড ভেঙে যায়। ঝিকরগাছা থেকে তাকে ঢাকার মগবাজারে আরোগ্য নিকেতন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে চিকিৎসার জন্য সাভারের সিআরপিতে নেয়া হয়। দেড় বছর চিকিৎসাধীন থাকায় পড়াশোনারও প্রচুর ক্ষতি হয়। এরপরও ছয় মাস পড়াশোনা করে ঝিকরগাছায় শহীদ মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। অনার্সে ভতি হওয়ার জন্য ঢাকা, চিটাগাং এবং কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস দোতলা-তিনতলা হওয়ার কারণে ভর্তি হতে পারেন না।

এ প্রসঙ্গে মিষ্টি জানান, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে ক্লাস না করার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া হলো না তার। ফিরে এলেন নিজের পৈতৃক ভিটায়। বিকমে ভর্তি হন শহীদ মশিউর রহমান ডিগ্রি কলেজে। এ কলেজ থেকে ১৯৯৬ সালে বিকম পাস করেন। সিএ পড়ার জন্য ঢাকায় হুদা অ্যান্ড কোম্পানিতে ভর্তি হন। কিন্তু বিভিন্ন কোম্পানিতে যাওয়া-আসা এবং যাতায়াতের সমস্যার কারণে সিএ পড়া হলো না তার। মনোবল হারালেন না। একাউন্টিংয়ে এমকমে ভর্তি হলেন মোহাম্মদপুরে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে।


এখানেও সেই পুরনো সমস্যা দেখা দিল। কীভাবে তিনি এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে এসে এমকম ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এ সম্পর্কে মিষ্টি বলেন, অধ্যক্ষ আমাকে ডেকে বললেন, ‘আমাদের ক্লাস হয় দোতলা-তিনতলায়। এজন্য তোমাকে নিতে পারছি না।’ এবার হার মানলাম না। স্যারকে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করলাম, আমার পরীক্ষার ফলাফলে একাউন্টিংয়ের নাম্বার সবার চেয়ে বেশি। সাতদিন আমি ক্লাস করব। তিন দিনের ক্লাসের তিনটি পরীক্ষা দেব। যদি পরীক্ষায় তিনটিতে হাইয়েস্ট নাম্বার পাই তাহলে আমাকে এখানে পড়ার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য ক্লাস একতলায় নিতে হবে। স্যার রাজি হলেন। পরীক্ষায় হাইয়েস্ট নাম্বার পেলাম। স্যার একতলায় ক্লাস নেয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। সে সঙ্গে ঘোষণা দিলেন দারোয়ান আমাকে যেন নিচতলার সিঁড়িটা তুলে দেন। পরীক্ষার সময় দোতলা-তিনতলায় সিট পড়েছে। শিক্ষকরা হুইলচেয়ারসহ আমাকে উপরে তুলে দিয়েছেন। এভাবে শিক্ষকদের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় নবম হই এবং ২০০১ সালে এমকম ফাইনাল পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করি। এমকম পরীক্ষার পরই বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতিতে ২০০১ সালে জুলাই মাসে প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন শাখার সমন্বয়কারী হিসেবে যোগদান করি। পাশাপাশি এমফিল করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই। আবারো একাডেমিক সমস্যার কারণে পড়া চালিয়ে যেতে পারলাম না।
তিনি আরো বলেন, প্রতিবন্ধী বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছি, প্রতিবন্ধী নারীদের মেধাসত্তাকে কাজে লাগানোর জন্য কাজ করছি। এজন্য বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিবন্ধী নারীদের প্রেরণা জোগাতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। কারণ একজন প্রতিবন্ধী নারী শারীরিক, মানসিক, দৃষ্টি, বুদ্ধি যে প্রতিবন্ধীই হোক না কেন তিনি নির্যাতনের শিকার হলে কখনো বলতে পারেন না। তাদের অধিকার আদায় করার জন্য, সহযোগিতার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য দরকার শিক্ষার। জার্মানিতে এক বছরের স্কলারশিপ নিয়ে ‘ডিজঅ্যাবিলিটি ওয়েলফেয়ার এক্সবসিবিলিটি পিয়ার কাউন্সিলিংয়ের ওপর গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করি। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা, কানাডা, ভারত ইত্যাদি দেশে প্রতিবন্ধী বিষয়ক সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে অংশ নিই। এখানে প্রতিবন্ধী নারীরই শুধু নয়, সব পেশাজীবী মানুষেরই প্রত্যক্ষ সহযোগিতা থাকতে হবে।’


লাভলী খাতুন

লাভলী খাতুন জন্মগতভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। চোখে না দেখলেও থেমে থাকেনি তার পড়াশোনা। স্বাভাবিক মানুষের মতো তিনিও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতিতে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। এ পর্যায়ে আসতে তাকে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে।

লাভলীর জন্ম ১৯৮৬ সালে বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার পশ্চিমপাড়া গ্রামে। পাঁচ বোন চার ভাইয়ের মধ্যে লাভলী ষষ্ঠ। নয় ভাইবোনের মধ্যে ওরা তিন বোনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ছয় মাস বয়সে ওর বাবা-মা বুঝতে পারেন তাদের এ মেয়েটিও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। ওর বয়স যখন তিন এবং সেজ বোনের পাঁচ তখন বগুড়ায় চক্ষু শিবিরের ক্যাম্পিং হয়। সেখানে দিনাজপুরের একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ আসেন। তিনি ওদের দুই বোনের চোখ পরীক্ষা করে জানান, ওদের চোখের সমস্যা নয়, অপটিক্যাল নার্ভের সমস্যা। চোখের সমস্যা না থাকায় ওদের চোখ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। নার্ভগুলো সতেজ হলেই ওরা দেখতে পারবে।
লাভলী জানান, সে সময় বগুড়ার শেরপুরে এবিসি নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। এ প্রতিষ্ঠান দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করত। শেরপুর শাখা অফিস জরিপ করে তাদের খুঁজে বের করে। সেখানে তারা দুই বোন ১৯৯১ সালে ১ মাস ১০ দিনব্যাপী একটি মোবিলিটি প্রশিক্ষণ নেন। এ প্রশিক্ষণের মাধমে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের স্বাভাবিক চলাফেরা, দৈনন্দিন কাজকর্ম ইত্যাদি বিষয় শেখানো হতো। এ প্রশিক্ষণ চলাকালে এবিসির একটি নতুন কার্যক্রম শুরু হয়। মেয়েদের শিক্ষার জন্য একটি গার্লস হোস্টেল প্রতিষ্ঠা করে। কারা সেই স্কুলে পড়তে আগ্রহী জিজ্ঞেস করতেই তিনি তার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ওই বছরই জুলাই মাসে এবিসি ১০ জন ছাত্রী নিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। প্রথম শ্রেণীতে জয়দেবপুর জকি স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট ব্রেইল পদ্ধতিতে সমন্বিত শিক্ষাব্যবস্থায় তাদের শিক্ষা দিতেন। স্কুলের শিক্ষকরা ব্রেইল পদ্ধতি না বোঝার কারণে হোস্টেল সুপারিনটেনডেন্ট তাদের পরীক্ষার খাতাগুলো দেখতেন। ফলে ভালো ফল করার পরও স্কুলের শিক্ষকরা তাদের ২০ জন শিক্ষার্থীর পর মেধা তালিকায় স্থান দিতেন। ষষ্ঠ শ্রেণীতে জয়দেবপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ স্কুল থেকে ২০০১ সালে এসএসসি পাস করেন। কলেজে পড়ার আগ্রহ জানিয়ে এবিসির কাছে আবেদন করেন। আবেদন মঞ্জুর হলে গাজীপুরে কাজী আজিমুদ্দীন কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় তার চেয়ে দুই বছরের জুনিয়র শিক্ষার্থী তার শ্রুতিলেখক হয়। ভালো শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শ্রুতিলেখক হতে দিতে রাজি হতেন না। ফলে যে দু’জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে শ্রুতিলেখক হওয়ার জন্য রাজি করানো হয়েছিল তাদের একজন বলে এত কষ্ট করে লিখে আপনাকে এ গ্রেড পাইয়ে দিলে আমাদের কী লাভ! বড় প্রশ্নের উত্তর এক পৃষ্ঠার বেশি লিখতে পারব না। বলতে থাকলে লেখা বন্ধ করে দেব। কোনো প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা করতে গেলে বলত পরীক্ষা দিতে আসছেন কেন? এ সমস্যার কারণে ফল আশানুরূপ হয়নি। এসব সমস্যার মধ্য দিয়ে ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি।


লাভলী আরো বলেন, এত সমস্যার পরও মনোবল হারাইনি। ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার ফর দ্য ব্লাইন্ডে যোগাযোগ দেই। মিরপুরে এ সংস্থার একটি শাখা রয়েছে। এখানে পিএবিএক্স এবং কম্পিউটার শাখায় প্রশিক্ষণের জন্য ২০০৪ সালে আবেদন করি। জুলাই থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। নয় মাসের প্রশিক্ষণ নিই। আমাদের প্রশিক্ষণ দেন দুজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রশিক্ষক। পিএবিএক্সে ছিলেন শিরিন আক্তার এবং কম্পিউটারে রাসেল হাসান। এখানে প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমিতি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমস্যাবিষয়ক একটি সভা করেন। সেখান থেকে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে তারা আমাকে জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট কোঅর্ডিনেটর হিসেবে মনোনীত করেন ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রশিক্ষণ শেষ হলে এপ্রিলের ৩ তারিখে কাজে যোগদান করি।



সুত্রঃ ২২ নভেম্বর, ২০১০, যায় যায় দিন।
http://www.jaijaidin.com/archive/2010-11-22/details.php?nid=218924

Distribution of Two Sewing Machines

On Saturday, 21 November, 2010 with the financial help of Rotary Club of Dhaka Central Bangladeshi Systems Change Advocacy Network (B-SCAN) has distributed two sewing machines to the families of two disabled persons through a simple program at Panthapath, Dhaka.



Those Sewing Machines were given to Khairunnesa, mother of a seven years old boy of intellectual disability named Hussain Mia and Ruby, mother of Sunia, thirteen years of age who has physically disability. They are both from the same village Pashchim Gao of Demra.

The members of B-SCAN hope that these Machines will help Hussain and Sunia’sfamily to improve their economic condition.

Sewing Machines were given by Roterian A.Q.Khan as Zakat. In the program those sewing machines were handed over by the Chairman of Faisal Investment Foundation Business andManagement Co.Limited Chairman Rotarian Commodore(rtd) Ataur Rahman and Director, Rotarian M.Quasim .

On behalf of B-SCAN General Secretary Salma Mahbub, Joint Secretary Syeda Farzana Sultana,Treasurer Oronno Anam and Executive Member Mohammad Hasan Milon was also present there.









বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বি-স্ক্যান এর প্রথম সেমিনার

গত ২ নভেম্বর, ২০১০ তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধী মানুষের সম্পৃক্তকরণঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারটির উদ্যোক্তা ছিলেন বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান)। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি আয়োজিত বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্টিত এই সেমিনারে সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন ব্লগারস ফোরাম।


দুটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশেনের প্রথমটিতে বি-স্ক্যান এর শুরু ও কার্যক্রম তুলে ধরা হয় এবং অপরটিতে দেখানোর চেষ্টা করা হয় কিভাবে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রুপান্তরিত করা যায়। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি- বাংলাদেশ এর ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বি-স্ক্যান এর যুগ্ন সচিব সৈয়দা ফারজানা সুলতানা তাঁর চমৎকার উপস্থাপনায় ‘তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধী মানুষের সম্পৃক্তকরণঃ প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ মুল তথ্য উপস্থাপনসহ অনুষ্টানটি পরিচালনা করেন। এই সময় বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি ও সেমিনারের প্রধান অতিথি জনাব, মোস্তফা জব্বার ও বি-স্ক্যান এর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডাঃ শুভাগত চৌধুরী এবং বি-স্ক্যান এর শুভাকাংখীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যে বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।


তথ্যপ্রযুক্তির যে সমস্ত খাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কাজ করতে পারেন-

ফ্রি-ল্যান্স,ডাটাএন্ট্রি,ওয়েব সাইট ডিজাইন,ওয়েব রিসার্চ, এস ই ও SEO- Search EngineOptimization/Optimizer (the process of improving ranking in searchengine results, it's also used for web marketing.),কল সেন্টারে, কাষ্টমারকেয়ার সার্ভিস সেন্টারে,সাংবাদিক হিসেবে ঘরে বসে কাজ করতে পারে ইন্টারনেটের মাধ্যমে, ফ্যাশন ডিজাইন, ল্যান্ডস্ক্যাপিং,বিল্ডিংড্রয়িং,আর্কিটেকচারাল ড্রয়িং (এসব ট্রেনিং দিলে প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশের বাইরে থেকেও অনলাইনভিত্তিক কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করা সম্ভব) এই সকল উদ্যোগের পূর্বশর্ত হচ্ছে সবার আগে প্রতিবন্ধী মানুষের যাতায়াত ও চলাফেরাকে সহজ করা। তারও আগে প্রয়োজন আমাদের মানসিকতা ও আচরণ পরিবর্তন।



বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও অন্যান্য সংগঠন যে সব ভুমিকা রাখতে পারে-

প্রথমতঃ আইটি খাতে প্রতিবন্ধী মানুষের সম্পৃক্তকরণ বিষয়ে তারা ক্যাম্পেইন চালাতে পারে। বিভিন্ন মেয়াদি ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করতে পারে- যেমন ৩ মাস, ৬ মাস, ১ বছর।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকুরির ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
বি-স্ক্যান অন্যান্য সংগঠনের সহায়তা পেলে এই ধরণের উদ্যোগ নিতে পারে।


যারা এই কর্মক্ষেত্রটি তৈরী করতে পারেন-
মোবাইল অপারেটরগণ যেমন গ্রামীণ, বাংলালিঙ্ক, ওয়ারিদ, সিটিসেল পারে তাদের জন্য ট্রেনিং ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে।
বিভিন্ন সংবাদপত্র, বিশেষ করে অনলাইন ভিত্তিক সংবাদপত্রগুলো তাদের কর্ম সংস্থান করতে পারে।
বিভিন্ন টিভি চ্যানেল পারে কর্ম সংস্থানের ব্যাবস্থা করতে।
কল সেন্টারগুলো পারে কর্ম সংস্থান করতে। বি-স্ক্যান এর নির্বাহী সদস্য মোঃ মিলন হাসান তার শিক্ষাজীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা সবাইকে শোনান।


এরপর ১৫ মিনিটের জন্য ফ্লোর ছেড়ে দিলে সংক্ষেপে বিভিন্ন দর্শক যা বলেন-


বুদ্ধী প্রতিবন্ধীদের নিয়ে যারা কাজ করেন সেই ধরণের  কোম্পানির জন্য সফটওয়্যার তৈরী করেন এমন একটি আমেরিকান কোম্পানির একজন বলেন, সেমিনারে যে প্রতিবন্ধকতাগুলোর কথা বলা হয়েছে-যেমন র‍্যাম্প, টয়লেট, লিফট, যাতায়াত ব্যাবস্থা ইত্যাদি সেগুলোর কারণে তারা কর্মসংস্থান করতে পারেন নি এই দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য। তারপরও তাঁরা তাঁদের জন্য নীচতলায় ব্যাবস্থা করে দেবেন। এভাবে যদি অন্যান্য কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসে তাহলে অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।


কম্পিউটার বিজনেস করেন এমন একজন বলেন, প্রতিবন্ধীদের স্কুল পর্যায় থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী করা তোলা দরকার।  প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এই বিষয়ে ট্রেনিং দেয়া, এই ক্ষেত্রে সরকার এবং বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।


মিরপুর থেকে আসা একজন দর্শক বলেন- প্রতিবন্ধীরা আমাদেরই একজন এই কথাটি আমরা যদি অনুধাবন করতে পারি তাহলে তাঁদের জন্য সবার পক্ষে কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করা সম্ভব হবে। সরকার বিভিন্ন কোম্পানিকে প্রতিবন্ধীদের চাকরি দিলে যে ট্যাক্স রিবেটের ব্যাবস্থা করার কথা বলেছেন তা মিডিয়াতে প্রচার করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।


ব্লগারস ফোরাম থেকে আগত আবু সায়ীদ বলেন, তাঁরা সবসময় বি-স্ক্যানের পাশে আছেন। বি-স্ক্যান যেই কাজে তাদের ডাকবেন তাঁরা সাধ্যমত সেই কাজে পাশে থাকার চেষ্টা করবেন। ব্যক্তিগতভাবে তিনি একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী এবং তাঁর বর্তমান ৪ চারটি চলমান প্রজেক্টে তিনি র‍্যাম্পের ব্যাবস্থা করতে বলে দিয়েছেন এবং টয়লেটের ব্যাবস্থাও করবেন। এ ব্যাপারে তিনি রাজুক ও রিহেবের সাথেও বসবেন।অন্যান্য দর্শকদের মধ্যে একজন বলেন- প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোতে ক্যাম্পেইন করতে।


বি-স্ক্যান এর প্রধান উপদেষ্টা জনাব শুভাগত চৌধুরী বলেন, সুযোগ পেলে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধীরা অবদান রাখতে পারেন। উদাহরণ হিসেবে তিনি বি-স্ক্যান গ্রুপটির কথা উল্লেখ্য করেন যার জন্ম তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে। মানুষের মাঝে আছে অনন্ত সম্ভবনা, সেই সম্ভবনাকে জাগিয়ে তুলতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। দৃষ্টিভংগী পরিবর্তনের জন্য নিজেকে দিয়ে চিন্তা করার আহ্ববান জানান।


অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনাব মোস্তফা জব্বার তার বক্তব্যে রাসেল ও লিপি নামে দুজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন প্রতিবন্ধীরা কাজ করতে পারেন না এ কথা একেবারেই ভুল। তথ্যপ্রযুক্তি একটি চমৎকার বিষয় হতে পারে তাদের উন্নয়নে। এতে কাজ করাও সহজ। সাবরিনার কন্ঠে রেকর্ডকৃত প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিটি অনুষ্ঠানের প্রথমে শোনানো হয়, পরে জনাব, মোস্তফা জব্বার সাহেব বলেন, সাবরিনার কন্ঠ শুনে তাঁর মনে হয়েছে এখন বিভিন্ন বিখ্যাত বইগুলোর অডিওবুকস তৈরী হচ্ছে, সেখানে তাঁর একটি কাজ হতে পারে। সাবরিনাকে বইটি দেয়া হবে তিনি সেটি রেকর্ডিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে রেকর্ড করে ইমেল করে পাঠিয়ে দেবেন। এভাবে সে রেডিও মিডিয়াতেও কাজ করতে পারেন। যিনি কথা বলতে পারেন না কিন্তু ভাল ছবি আঁকতে পারেন তাঁকে সফটওয়্যার ডেভেল্পমেন্টে কাজ দেয়া যেতে পারে। এমনিভাবে তিনি বেশ কয়েকটি বিভাগের কথা বলেন যা জানা থাকলে তিনি চাকরি দিতে পারেন, ফটোশপ ইলাস্টেটার, ওয়েব ডিজাইন, ফ্লাশ ইত্যাদি। তিনি বিভিন্ন কম্পিউটার ট্রেনিং এ সহায়তা করার কথাও বলেন। চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করায় তিনি বি-স্ক্যানকে ধন্যবাদ জানান। পরবর্তীতে মার্চের বিসিএস মেলায় প্রতিবন্ধীদের কর্মক্ষমতার উপর দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করার কথা জানান।


এরপর বি-স্ক্যান সদস্য জাহিদুল ইসলাম ঘরে বসে ইন্টানেটের মাধ্যমে আউট সোর্সিং এর কাজ করছেন। সেই বিষয়ে সবাইকে জানান ও আরো কোন কোন দিকে কাজ করা যেতে পারে তা তুলে ধরেন। বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সেক্রেটারী জেনারেল মুজিবর রহমান স্বপন তাঁর বক্তব্যে বলেন- আমরা সবাই কোন না কোনভাবে সকলেই প্রতিবন্ধী। পৃথিবীতে একটি মানুষও বলতে পারবেন না তিনি নিখুঁত।


সবশেষে বি-স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও সুশীল সমাজের নৈতিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন- সুশীল সমাজের নৈতিক দায়িত্ব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মবিশ্বাস তৈরীতে সাহায্য করা এবং তাদের প্রাপ্য অধিকার কে ‘না’ না বলে ‘হাঁ’ বলতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি ০২/১১/২০১০



গত ২ নভেম্বর ২০১০ বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) এর উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও ব্লগার্স ফোরাম এর সহযোগিতায় তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধী মানুষের সম্পৃত্তকরণ: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি জনাব মোস্তফা জব্বার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বি-স্ক্যান এর প্রধান উপদেষ্ঠা ডা: শুভাগত চৌধুরী, পরিচালক লেবরেটারি সার্ভিসেস, বারডেম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বি-স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব।
উক্ত সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সম্পৃক্তকরণ নিয়ে মূল তথ্য উপস্থাপন করেন বি-স্ক্যান এর যুগ্ন সম্পাদক এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি- বাংলাদেশ  এর ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক  সৈয়দা ফারজানা সুলতানা। প্রধানমন্ত্রির কাছে লেখা একটি চিঠি পাঠ করেন বি-স্ক্যান এর সভাপতি সাবরিনা সুলতানা। এছাড়া নিজস্ব অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন বি-স্ক্যান এর নির্বাহী সদস্য চলৎ প্রতিবন্ধী মোঃ হাসান মিলন এবং মোঃ জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্য ও প্রযুক্তিখাতে প্রতিবন্ধী মানুষের সম্পৃক্তকরণ বিষয়ে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার কথা বলেন এবং সর্বাত্নক সহযোগীতার আশ্বাস দেন। বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের আহ্ববান জানান। উপস্থিত দর্শকগণ তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা এবং পরামর্শ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে ধন্যবাদজ্ঞাপন করে বক্তব্য প্রদান করেন মেলার আয়োজক কমিটির প্রধান  এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব মজিবুর রহমান স্বপন এবং বি-স্ক্যান এর সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব।


ধন্যবাদান্তে –
সৈয়দা ফারজানা সুলতানা
যুগ্ন সচিব, বি-স্ক্যান।

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub