প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ব্যাপারে সমাজে নেতিবাচক ভাবনা বদলে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিত করতে গণসচেতনতা’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশী সিস্টেমস চেঞ্জ এ্যাডভোকেসী নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান)। ১২ ফেব্রুয়ারী ২০১১, শনিবার ফ্রেপড মিলনায়তনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় ।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি - বাংলাদেশ এর ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বি-স্ক্যান এর যুগ্ন সম্পাদক সৈয়দা ফারজানা সুলতানা তাঁর চমৎকার উপস্থাপনায় প্রথমেই ‘প্রবেশগম্যতা’ ও ‘প্রতিব্ন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ে দুটি প্রেজেন্টেশেন করেন।
সেমিনারে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তাহলো পৃথিবীর অনেক দেশে ‘জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদ’ অনুযায়ী আইন তৈরী হচ্ছে এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সর্বক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও বিল্ডিং কোডে উল্লেখ থাকলেও এ ব্যাপারটি তেমনভাবে মানা হচ্ছে না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কেট,পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র কোথাও হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর উপযোগী র্যাম্পের অস্তিত্ব তেমনভাবে চোখে পড়ে না। নেই তাদের উপযোগী কোন টয়লেট।
জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার আইন কমিটির সদস্য জনাব মনসুর আহমেদ বলেন, জাতিসঙ্ঘ প্রতিবন্ধীঅধিকার আইন এর ৯ নং ধারা অনুযায়ী প্রবেশগম্যতা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেটা যেমন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর জন্য প্রযোজ্য ঠিক তেমনিভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার রক্ষায়ও প্রযোজ্য।
সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে সাধারন সম্পাদক সালমা মাহবুব বলেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতিবন্ধিতার দিকে না তাকিয়ে তার মাঝে প্রতিভার বিকাশ ও বিকশিত প্রতিভার মূল্যায়ন জরুরি।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি - বাংলাদেশ এর ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বি-স্ক্যান এর যুগ্ন সম্পাদক সৈয়দা ফারজানা সুলতানা তাঁর চমৎকার উপস্থাপনায় প্রথমেই ‘প্রবেশগম্যতা’ ও ‘প্রতিব্ন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ে দুটি প্রেজেন্টেশেন করেন।
সেমিনারে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তাহলো পৃথিবীর অনেক দেশে ‘জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদ’ অনুযায়ী আইন তৈরী হচ্ছে এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সর্বক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও বিল্ডিং কোডে উল্লেখ থাকলেও এ ব্যাপারটি তেমনভাবে মানা হচ্ছে না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মার্কেট,পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র কোথাও হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর উপযোগী র্যাম্পের অস্তিত্ব তেমনভাবে চোখে পড়ে না। নেই তাদের উপযোগী কোন টয়লেট।
র্যাম্প না থাকলে কি অসুবিধা হয় এবং কিভাবে খুব সহজে একটি বহনযোগ্য র্যাম্প তৈরী করা যায় তার ভিডিও চিত্র দেখানো হয়। এখানে উল্লেখ্য যে বাইরের দেশে বহনযোগ্য র্যাম্প পাওয়া গেলেও এখানে এই ধরণের র্যাম্প এই প্রথম বি-স্ক্যান এর উদ্যোগে তৈরী করা হয়েছে। যা খুব শীঘ্রি ব্যাপক প্রচার ও প্রসারের জন্য কাজ শুরু করা হবে।
‘প্রতিব্ন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ে বলা হয় প্রতিবন্ধিতা এক ধরণের ভিন্নতা। বাংলাদেশের ১০ শতাংশ মানুষ প্রতিবন্ধিতার শিকার। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর অধিকার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে গণমাধ্যমের কোন বিকল্প নেই। মনের বিশালতা বাড়ানোর প্রয়োজন। সেইসাথে পাঠ্যবইয়ে প্রতিবন্ধীদের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। মিডিয়া মানুষের মনের কুসংস্কারগুলো দূর করতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন প্রতিবন্ধিতা একটি অভিশাপ। বিজ্ঞাপন চিত্রগুলোতে মানুষকে সুন্দর হয়ে উঠার নানা রকম কৌশল শেখানোর চর্চা চলে যা প্রভাব ফেলতে পারে মানব বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করার মন মানসিকতায়। অন্যদিক থেকে হীনমন্যতা তৈরি করতে পারে একজন প্রতিবন্ধী মানুষের ভাবনায়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে এর প্রভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। টিভি বিজ্ঞাপনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত। বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন, কিন্তু দেড় কোটি প্রতিবন্ধী মানুষকে বাদ দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরী সম্ভব নয়।
বিশেষ অতিথিরা যা বলেন-
বি-স্ক্যান সভাপতি সাবরিনা সুলতানা তাঁর বক্তৃতায় বি-স্ক্যান এর জন্ম থেকে এ পর্যন্ত কর্মকান্ড তুলে ধরেন। সেই সাথে তিনি দৃষ্টভঙ্গী পরিবর্তনের আহ্ববান জানান।
জাতিসংঘ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবর্গের অধিকার আইন কমিটির সদস্য জনাব মনসুর আহমেদ বলেন, জাতিসঙ্ঘ প্রতিবন্ধীঅধিকার আইন এর ৯ নং ধারা অনুযায়ী প্রবেশগম্যতা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সেটা যেমন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর জন্য প্রযোজ্য ঠিক তেমনিভাবে তথ্যপ্রযুক্তিতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার রক্ষায়ও প্রযোজ্য।
অত্যন্ত বিনয়ের সাথে তিনি কবি, সাহিত্যিক,নাট্যকারদের অনুরোধ জানান তাঁরা যেন প্রতিবন্ধীদের করুণার পাত্র হিসেবে না দেখিয়ে তাঁদের ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেন। বি-স্ক্যান এর উদ্যোগের প্রশংসা করে পর্যায়ক্রমে তা করে তা সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন বড় বড় শহরে চালিয়ে নিয়ে যাবার আহ্ববান জানান। তিনি বলেন প্রযুক্তিকে নির্ভর করে যদি এগিয়ে যেতে পারেন বি-স্ক্যান সাংঘাতিক ভাল একটি ভূমিকা রাখতে পারবে।
যুগ্ন সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের জনাব বদিউল আলম বলেন প্রবেশগম্যতার ব্যাপারটি সরকারী পর্যায় থেকে নিশ্চিত করা হচ্ছে। শিক্ষার পর প্রতিবন্ধী মানুষের বিষয়টিই অধিক গুরুত্ব পাচ্ছে তাঁদের কাছে। প্রতিটি মানুষের মাঝে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাঁর বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট। সেই প্রতিভার মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
কবি ও স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রবক্তা জনাব বেলাল মুহাম্মদ বলেন, আমরা আজো এ দেশে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে পারিনি প্রতিবন্ধী আসলে আমরাই।
এছাড়াও সেমিনারে চলচ্চিত্র নির্মাতা জনাব সজল খালেদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট জনাব নুরুল কবির, রোটারি ক্লাব ঢাকা সেন্ট্রালের সদস্য কমোডর আতাউর রহমান, এস.ডি.এস.এল এর সদশ্য শিরিন সুলতানা বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন কিভাবে তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে বি-স্ক্যান এর সাথে জড়িয়ে পড়েন। বি-স্ক্যান যুগ্ন সম্পাদক সৈয়দা ফারজানা সুলতানার সাথে একমত হয়ে তিনি বলেন আসলেই বিজ্ঞাপণগুলো মানুষকে শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দের্যের প্রতি আকৃষ্ট করে তুলছেন, যা মোটেও কাম্য নয়। সুযোগ পেলে অন্যরকমভাবে সক্ষম এই মানুষগুলো যে কোন কাজের জন্য দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনে বি-স্ক্যান এর মত সংগঠনগুলো কার্যকরীভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।
সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে সাধারন সম্পাদক সালমা মাহবুব বলেন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রতিবন্ধিতার দিকে না তাকিয়ে তার মাঝে প্রতিভার বিকাশ ও বিকশিত প্রতিভার মূল্যায়ন জরুরি।
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment