‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট আর বিশ্বাস হূদয়ে, হবেই হবে দেখা, দেখা হবে বিজয়ে।’ হ্যাঁ, দেখা হবে সাফল্যের সঙ্গেও। লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাসের পারদকেও সব সময় রাখতে হবে অনেক ওপরে, যেন কোনো অবস্থাতেই ব্যর্থতা এসে গ্রাস করতে না পারে। তবেই হবে লক্ষ্যে পৌঁছানো, পাওয়া যাবে সফলতার স্বাদ। তবে সবাই তা করতে পারেন না। আর যাঁরা পারেন, তাঁরা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকেন। তেমনি একজন আমেরিকার মার্ক ওয়েলম্যান। তিনি একাধারে পর্বতারোহী, অ্যাথলেটিক এবং ধারাবর্ণনাকারী। বাদামি গোঁফওয়ালা ওয়েলম্যানের বয়স যখন ১২ তখন থেকেই তাঁকে পর্বতারোহণের নেশা পেয়ে বসে। ধরতে গেলে পর্বত আরোহণটাই তাঁর পৃথিবী হয়ে ওঠে। সুযোগ পেলেই আজকে এখানের, তো কালকে ওখানের পাহাড়ে ওঠার দুর্নিবার চেষ্টা। তাঁর বয়স যখন ২১ তখন একটা পাহাড় থেকে নামতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। এতে তাঁর কোমরের নিচ থেকে পা পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে অকেজো হয়ে যায়। সাড়ে সাত বছর চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি মনস্থির করলেন, আবার পাহাড়ে উঠবেন, সেটা যেভাবেই হোক। তার পরেরটুকু ইতিহাস। তিনি বিকলাঙ্গ হয়ে গেলেও ভেঙে পড়েননি। নিজেকে অসহায়ত্বের কাছে সমর্পণ করেননি, তাঁর কক্ষপথেই অবিচল ছিলেন। তিনি একটি বিশেষ ধরনের হুইলচেয়ার কিনলেন, যেটার মাধমে শরীরের নিচের অংশ চেয়ারের সঙ্গে আটকে থাকে। এরপর তিনি এবং তাঁর আরেক পর্বতারোহী বন্ধু মাইক কর্বেট মিলে ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমিতে ন্যাশনাল পার্কের ৩০০০ ফুট উচ্চতার পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চতার শিলাখণ্ডের পর্বত ইআই কাপিতান আরোহণ করেন ১৯৮৯ সালে। ১৯৯১ সালে তাঁরা দুজনে মিলে আবার ইআই কাপিতানের পাশের আরেকটু উচ্চতার পর্বত হাফ ডোম বিজয় করেন। এভাবে তিনি প্রায় ৫০টির মতো পর্বতারোহণ করেন। মার্ক ওয়েলম্যান স্কি খেলাতেও দক্ষ। তিনি আমেরিকার স্কির জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি জাতীয় দলের হয়ে দুটি প্যারা অলিম্পিকেও অংশ নিয়েছিলেন। তিনি তাঁর লিখিত বই ক্লাম্বিং ব্যাক-এ তাঁর জীবনের প্রতিটি উত্থান-পতনের কথা বিস্তৃত করেছেন। কীভাবে তিনি উৎসাহ পেয়েছেন, শেষ পর্যন্ত তিনি কীভাবে সফল হয়েছেন, তা তিনি উল্লেখ করেছেন। তিনি ভালো একজন বক্তা হিসেবেও সুপরিচিত। ওয়াশিংটনভিত্তিক ডিজএবল স্পোর্টস, ইউএসএর ধারাবর্ণনাকারী ও ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য সরকারের খেলাধুলাবিষয়ক উপদেষ্টা তিনি। বর্তমানে তিনি নো লিমিটস নামে একটি সংগঠন খুলেছেন উত্তর ক্যালিফোর্নিয়াতে, যেখানে তিনি পর্বতারোহণ সম্পর্কে কোচিং করান। মূলত যাঁরা শারীরিকভাবে অক্ষম, তাঁদের নিয়েই তিনি কাজ করেন। মাঝেমধ্যে তিনি ক্যাম্পেইন করেন, যাতে সমাজের অবহেলিত মানুষগুলো আশা না হারায়, উৎসাহ পায়।
সুত্রঃ প্রথম আলো, ২৯/৯/২০১০।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-29/news/97147
সুত্রঃ প্রথম আলো, ২৯/৯/২০১০।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-09-29/news/97147
0 মন্তব্য(সমূহ):
Post a Comment