মানুষ দাঁড়ায় মানুষের পাশে

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরীর কলম থেকে পরিচালক, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম হাসপাতাল সাম্মানিক অধ্যাপক, ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, ঢাকা। | তারিখ: ১৪-০৭-২০১০


যাঁরা দুর্ভাগ্যক্রমে প্রতিবন্ধী, তাঁদের আপন করে নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমাদের মতো তাঁদের ইচ্ছে হয় লেখাপড়া করার, অফিস-আদালতে কাজ করার, আত্মনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকার। তাঁদের মধ্যে যে শক্তি আছে, এর পূর্ণ ব্যবহার করার অধিকার তাঁরা চান। এ তো খুব সংগত কথা।
আমরা যদি একটু তাঁদের পাশে দাঁড়াই, তাহলে তাঁরা নিজেদের শক্তিতেই উঠে দাঁড়াবেন। সমবেদনা নয়, সহমর্মিতা তাঁদের প্রয়োজন।
যাঁরা আমাদের মতো মুক্ত হয়ে চলাচল করতে পারেন না, হুইল চেয়ারে বসে চলেন, তাঁদের অনেকে তুখোড় মানুষ। শহরে-নগরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবনে প্রবেশের জন্য তাঁদের র‌্যাম্প; আর হুইল চেয়ার যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের প্রয়োজন একটি বিশেষ টয়লেট। অথচ এ কাজটি করতে আমাদের খুব যে অর্থ ব্যয় হবে, তা নয়। একটু সদিচ্ছা চাই। তাহলে তাঁদের একটি বড় উপকার করা হয়। এমনই একজন সে দিন গিয়েছিলেন দৃক গ্যালারিতে। অথচ এক্সিবিশনটি তাঁর দেখা হলো না। গ্যালারি তিনতলায়। নিচতলা পুরোটায় অফিস, নেই কোনো লিফট।
তিনি কর্তাদের হয়তো তাঁদের জন্য টয়লেটের সুবিধার কথাও বলেছেন। কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছেন, পরবর্তী সময় দৃক গ্যালারি প্রতিবন্ধীবান্ধব হবে হয়তো। আরেক দিন এলেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে। ওখানে যাঁরা আছেন, তাঁদের কাছে ব্যাপারটা তুলতেই তাঁরা বুঝলেন, হুইল চেয়ার যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের জন্য ব্যবস্থা রাখা দরকার।
এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে উঠছে এ দেশে। অনেকেই ব্যাপারটা জানেন না, গুরুত্বও অনুধাবন করেন না। বি-স্ক্যান নামে একটি সংগঠন এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে এগিয়ে এসেছে। আশাব্যঞ্জক সাড়াও পাওয়া গেছে। সেবামূলক, বিনোদন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে র‌্যাম্প ও বিশেষ টয়লেট থাকা উচিত, এ বিষয়টি বোঝা শুরু হয়েছে। আশা করি, সবাই সাড়াও দেবেন এ ব্যাপারে। ব্রিটিশ কাউন্সিলে কেবল একটি র‌্যাম্প আছে, কিন্তু টয়লেট নেই। তবে ফুলার রোডে তাদের প্রধান কার্যালয়ে এ ব্যবস্থা আছে। বি-স্ক্যানের সালমা, সঙ্গে প্লাবন ও অপু সফর করে জানালেন এসব কথা।


প্রথম আলো- অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, ১৪ জুলাই ২০১০।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-07-14/news/78413

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub