প্রতিবন্ধিতার কাছে হার না মানা মালেকের পাশে বি-স্ক্যান

মালেক শেখ, মুজিবনগর নিবাসী, জন্ম হয়েছিল শারীরিক প্রতিবন্ধিতা নিয়ে। অনেকেই তাকে দেখে হয়তো মানুষ বলে মেনে নিতে চান নি। কিন্তু আজ নিশ্চয়ই তাঁকে সবাই সমীহ করেন, ভালবাসেন। মালেকের শিক্ষা জীবনের শুরটা ছিল অনেক কঠিন। ছোটবেলা বাবা মারা গেছেন,দুই ভাই এক বোনের সংসারটি তার মা সেলাই কাজ করেই চালাতেন। মালেক ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী ছিলেন তিনি। তাঁর মা সর্বাত্নক সহযোগিতা করেছেন এই ইচ্ছে পূরণে। ক্লাস ওয়ানে যখন একটি মিশনারি স্কুলে তাঁকে ভর্তি করার চেষ্টা করা হয় তখন সেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে নেন নি প্রতিবন্ধিতার কারণে। পরে সরকারি একটি স্কুল তাঁকে একমাস পর্যবেক্ষণের শর্তে স্কুলে নেয়, যখন তারা মালেকের মেধার পরিচয় পেলেন তখন তাঁকে ভর্তি করে নেন। এই স্কুল থেকেই মালেক এস এস সি পাশ করেছেন। তার মা প্রতিদিন তাঁকে স্কুলে পৌছে দিয়ে বসে থাকতেন ছুটির পর একবারে বাসায় নিয়ে যেতে। এসএসসি পাশের পর মালেক স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হলেন যেটা বাড়ি থেকে আট মেইল দূরে ছিল। বন্ধুর সাথে সাইকেল এর সামনে বসেই চলে যেতেন। মালেকের বন্ধু ভাগ্য ভাল না হলো তিনি হয়তো তাঁর লেখাপড়া সেভাবে এগিয়ে নিতে পারতেন না। সবাই তাকে সহযোগিতা করতো। কলেজ উঠার পর থেকে মালেকের এক খালাতো ভাই তার সাথে পড়তেন যিনি সবসময় তাঁকে সহযোগিতা করে এসেছেন। ইচ্ছে ছিল এইচএসসি র পর অনার্স পড়বেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রথমবার তিনি সুযোগ পেলেও তাঁর ভাইটি পেলেন না তাই পড়া হলো না। পরে পরীক্ষা দিলেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে সেখানে একই অবস্থা তাঁর ভাই পাশ করলেন না। এই বছর আবার পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশেন সায়েন্সে ওয়েটিং লিস্ট এ ছিলেন। কিন্তু একা থাকা ও দোতলা তিনতলায় ক্লাস করা সম্ভব নয় বলে আর সেখানে পড়া হলো না। মালেক অবশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছিলেন, এখন সেখানেই পলিটিকাল সায়েন্সে অনার্স পড়ছেন। যদিও ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরাজিতে অনার্স পড়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয় নি তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারনে। আজ বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে বইপত্র কেনার জন্য ৬০০০ টাকার একটি চেক তুলে দেয়া হলো মেধাবী ছাত্র মালেক শেখ এর হাতে। শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে যিনি এগিয়ে চলেছেন।





সব জায়গায় হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচলের সুবিধা নেই বলে মালেক কখনও বন্ধু কখনও বা ভাইয়ের কাঁধে চড়ে ঘুরে বেড়ান। ঢাকা এলে হুইলচেয়ারটি তিনি বাড়িতেই রেখে আসেন। মালেক আজ হাতে পেয়েছেন একটি ল্যাপটপ ও ইন্টানেট সংযোগ। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই অনলাইনে তাঁকে আমাদের মাঝে দেখতে পাবো। 

- সালমা মাহবুব
২৪ এপ্রিল, ২০১১

2 মন্তব্য(সমূহ):

Anonymous said...

Malek, please add me as your friend. I am waiting. Ishaque Mia

Anonymous said...

আমরা অপেক্ষা করছি ভীষণভাবে।

Post a Comment

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub