এডিডি ও বুয়েটের যৌথ উদ্যোগে সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা বিষয়ক সেমিনার

বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০১১, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য প্রবেশগম্য অবকাঠামো - নীতি ও প্রকারসমূহ  (Accessible Infrastructure for Persons with Disabilities – Issues and Options) শীর্ষক এক  সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রবেশগম্যতার উপর বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক জনাব, এস এম নাজমুল ইমাম ও লেকচারার মাতলুবা খান মুল প্রবন্ধ পাঠ করেন। 



প্রবন্ধে যে  বিষয়গুলো উঠে এসেছে - 

*২০০৮ সালের ইমারত নির্মান বিধিমালা অনুযায়ী সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। যেমন একজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীর জন্য র‍্যাম্প কি মাপের হওয়া উচিত। টয়লেটে কি পরিমান জায়গা ও কি কি সুবিধা থাকা দরকার, করিডোরে কি পরিমান জায়গা থাকা দরকার ইত্যাদি। একইভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য কি কি ব্যবস্থা থাকা দরকার। যেমন লিফটে ব্রেইল বাটন, অডিওর সাহায্যে ফ্লোর জানানো ইত্যাদি। এছাড়াও সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নন, বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুর জন্যও প্রয়োজন। 
*প্রবন্ধে খুব চমৎকারভাবে মানুষের একটি জীবনচক্র তুলে ধরা হয়। সেখানে দেখানো হয়েছে একজন মানুষ যখন জন্মগ্রহন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানাভাবে প্রতিবন্ধিতার শিকার হোন। একটি শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তখন সে  অন্যের উপর নির্ভরশীল থাকে। পরবর্তীতে তার জীবনে অসুখ, দুর্ঘটনা, যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি কারণে প্রতিবন্ধিতা আসতে পারে। এছাড়াও বৃদ্ধ বয়সে প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়।



*প্রতিবন্ধিতা বিষয়টিকে আপেক্ষিকভাবে উল্ল্যেখ করা হয় যেমন যদি কোন কারণে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে কোন শহরে ইলেক্ট্রিসিটি বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ব্ল্যাকাউট করা হবে তাহলে একমাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ছাড়া আর কেউই নির্বিঘ্নে চলতে পারবেন না। তখন যারা চোখে দেখতে পান তারাই হয়ে যাবেন প্রতিবন্ধী।
আমাদের ইমারত নির্মান বিধিমালাটি আমেরিকার ডিজেবিলিটি এ্যাক্ট অনুযায়ী তৈরী করা। কিন্তু ওদের শারীরিক কাঠামোর সাথে আমাদের অনেক পার্থক্য। যেমন ওদের গড় উচ্চতা ৫ ফিট ৯ ইঞ্চি আর আমাদের গড় উচ্চতা মাত্র ৫ ফিট পৌনে ৪ ইঞ্চি। সুতরাং ওদের দেশের হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী চেয়ার বসা অবস্থায় যে উচ্চতার জিনিসের নাগাল পাবেন আমাদের ক্ষেত্রে সে উচ্চতায় বানালে চলবে না।  তাই এক্ষেত্রে কিছু গবেষণার ব্যাপার রয়েছে যেখান থেকে আমাদের শারীরিক অবকাঠামো অনুযায়ী একটি বিধিমালা তৈরী করতে হবে যাতে সব জায়গায় সেই নিয়মটি অনুসরন করা হয়।  



যে বিল্ডিংগুলো সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা তৈরীর ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা মনোভাগ গড়ে তুলতে নজীরস্থাপনকারী বিল্ডিংকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। 
ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট, বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান জনাব, মোবাশের হোসেইন বলেন, কোন বিল্ডিং যদি সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার বিষয়টি নামেন তাহলে সেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রীট পিটিশেন করা যেতে পারে।  সেই ক্ষেত্রে  ঐ বিল্ডিংয়ের  স্থপতির ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। 
গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রী জনাব, আব্দুল মান্নান খান বলেন, আমাদের উপর চাপ তৈরী করুণ যেন আমরা এ ব্যাপারে আরো বেশী কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারি। তিনি সবাইকে সচেতন হবারও আহ্বান জানান। সরকারী সেবামূলক অফিসগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য নীচতলায় নামিয়ে আনা হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।

এ্যাকশেন অন ডিসেবিলিটি এ্যান্ড ডেভেলোপমেন্ট (এডিডি) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করেন। সেমিনারটি পরিচালনা করেন এডিডি র কান্ট্রি ডিরেক্ট্রর জনাব, মোশারফ হোসেন। আলোচকদের মাঝে  ছিলেন বাংলাদেশ স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ডঃ জেবুন নাসরিন আহমেদ ও উপ-উপাচার্য এম হাবিবুর রহমান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশেনের পরিচালক রীনা রায় প্রমুখ। 



বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে তাঁদের তৈরী পোর্টেবল র‍্যাম্পটি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যেটি সেখানে হুইলচেয়ার ব্যবহারীদের বেশ কাজে লাগে। বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের আমন্ত্রণে, তাঁদের পুরকৌশল ভবনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এই সেমিনারে বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে সালমা মাহবুব, সামিউল আলম রিচি ও এস. কে. টিনা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

একীভূত শিক্ষার জন্য জনসচেতনতা তৈরীর উদ্যোগ

যে জীবন এতদিন এদেশের প্রতিবন্ধী মানুষেরা কাটিয়ে এসেছেন আমরা জন সচেতনতার মাধ্যমে তার পরিবর্তন আনতে চাই । কারণ আমরা মনে করি সমাজের ব্যক্তির আচরণই আমাদের প্রথম প্রতিবন্ধকতা, যা না থাকলে আমরা আজ এভাবে পিছিয়ে থাকতাম না। বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১১ থেকে শুরু হয়েছে আমাদের প্রতিবন্ধী শিশুদের সাধারণ শিক্ষায় একীভূত করণের বি-স্ক্যান ক্যাম্পেইন।

  

সরকারের মহাপরিকল্পনা ২০১৫ সালের মাঝে প্রতিবন্ধী শিশুসহ সকল শিশুকে শিক্ষার আওতায় আনার কথা মাথায় রেখে আমরা বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা কাজ হাতে নিয়েছি। এই পর্যায়  আমরা গিয়েছিলাম নিউ ইস্কাটন রোডে অবস্থিত ইউনিভার্সাল টিউটোরিয়াল স্কুলে। অনুষ্ঠানে মৃদু থেকে মাঝারী মাত্রার প্রতিবন্ধী শিশুদের একীভূত শিক্ষায় অন্তর্ভূক্তিতে করণীয় পদক্ষেপের উপর একটি প্রেজেন্টেশেন করা হয়


প্রেজেন্টেশেনে মূলত যা তুলে ধরা হয়ঃ 
প্রতিবন্ধী মানুষ কারা?
কিভাবে জাতিসংঘ সনদসহ বাংলাদেশ সরকার তাদের অধিকারকে প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন,তাদের জন্য সহায়ক ব্যবস্থাগুলো কি?
কিভাবে স্কুলগুলো প্রতিবন্ধী শিশুদের ভর্তির ব্যাপারে উদ্যোগী হতে পারে?
অভিভাবকগণকে কিভাবে সচেতন করে তোলা যায়?
যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা কি হতে পারে,ইত্যাদিএছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রয়াসকে শিক্ষক,অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা। 


উদাহরণ হিসেবে আরো বলা হয়  তাসনিন সুলতানার চিটাগং রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এ্যান্ড কলেজের কথা। ক্লাস সেভেন থেকে প্রতিবছর স্কুলটি ক্লাসগুলো উপর তলা থেকে নীচতলায় নামিয়ে আনছেন। কারণ মাস্কুলার ডিস্ট্রফীর কারণের তাসনিনের পক্ষে সিড়ি বেয়ে উঠা নামা করা সম্ভব নয়। প্রতিটি স্কুল যদি আজ এই প্রতিষ্ঠানটির মত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিত তাহলে প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার হার অনেক বেড়ে যেত।



ইউনিভার্সাল টিউটোরিয়াল এর প্রধান শিক্ষকসহ সকলেই বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথে নেন এবং বি-স্ক্যান এর উদ্যোগটিকে স্বাগত জানান বর্তমানে এই স্কুলে একজন  শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশু পড়ছেন এবং তাঁরা আরো প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী
___________________________________________

In English


Campaign for Inclusive Education

We want to make a change through raising awareness among mass people about the way people with disabilities are living their lives in this country. We think attitude is the main barrier for us. Otherwise we wouldn’t have fall behind in most of the  sectors miserably.

Considering the program of the govt to include all children in education by the year 2015, we have taken a step to raise awareness in different schools, colleges and universities. On Thursday, 21 April, 2011, we went to Universal Tutorial school at New Eskaton for advocacy on this regard. We did a presentation on "Inclusive education of the children with mild to moderate disabilities". Actually, we briefed them about the people with disabilities. Our briefing covered the following salient points:

1. How the UN Convention and also Bangladesh Govt is trying to establish the rights of them?
2. What are the supportive system for them?
3. What is Universal Accessibility?
4. How could the school authority take some initiative to bring them to education?
5. What could be a possible alternative transportation etc
Besides these we tried show among the parents, teachers and students how are individuals with disabilities are trying to study in different part of the Bangladesh.

For an example, we told them about Chittagong Residential Model School and College. They are the shifting the classes from upstairs to downstairs for Tasnin Sultana last two years, as she is a person with muscular dystrophy, unable
to climb  the stairs. She is now in class IX. If every school would have shown the support like them a lot of Tasnin could have accessibility to education.

Everybody of the Universal Tutorial took the matter seriously, including the Principal and praised the initiative taken by the B-SCAN. A child with hearing impairment is already reading in that school and they are eager to take more children with mild to moderate disabilities.

Written by Salma Mahbub

 কোনো বাধাই বাধা নয়

তার বয়স মাত্র ১০ বছর। এ বয়সেই স্কুলপড়ুয়া আলেক্সিয়া স্লোয়েন চারটি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেছে। এসব ভাষায় সে অনর্গল কথা বলতে পারে। চমক আরও আছে। ১০ বছরের এ মেয়েটি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে দোভাষী হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু আর স্বাভাবিক দশটা মেয়ের মতো নয় স্লোয়েন। সে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।

ইংল্যান্ডের ক্যামব্র্রিজ শহরের বাসিন্দা আলেক্সিয়া। তার বাবা রিচার্ড ইংরেজ, মা ইসাবেলা আধা ফরাসি ও আধা স্প্যানিশ। মা-বাবার সুবাদে শিশু বয়সে ঘরেই সে ইংরেজি, ফরাসি ও স্প্যানিশ এই তিন ভাষার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়। পরে সে ম্যান্ডারিন ভাষা শেখে। এখন শিখছে জার্মান ভাষা।



মা ইসাবেলা জানান, ‘আলেক্সিয়া তখন দুই বছরে পা দিয়েছে। আমরা ছুটি কাটাতে ফ্রান্সে গিয়েছি। সেখানে ওর মস্তিষ্কে টিউমার ধরা পড়ে। তখনই চোখের আলো নিভে যায়। হলে হবে কী, মনের আলোয় সে সবকিছু দেখার পণ করে। ভাষা শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে। ছয় বছর বয়সে সে ইয়াং অ্যাচিভার কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ড জয় করে। তখন থেকেই সে ইইউর দোভাষী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। ১০ বছরে বয়সে এসে স্বপ্ন পূরণ হলো ওর। এটা সত্যি বিস্ময়কর ঘটনা।’

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী দোভাষী হতে হলে ন্যূনতম ১৪ বছর বয়সী হতে হয়। এই বাধ্যবাধকতার কারণে ওই পার্লামেন্টে ছায়া দোভাষীর কাজ করার আবেদন জানায় আলেক্সিয়া। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত ব্রিটিশ সদস্য রবার্ট স্টারডি এ আবেদনে সাড়া দেন। তিনি আলেক্সিয়াকে তাঁর অতিথি হিসেবে পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে সম্মত হন। এভাবেই আলেক্সিয়ার স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম হয়।

নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে দিয়ে আলেক্সিয়া বলে, ‘এটা সত্যি একটা চমৎকার ব্যাপার। কোনো প্রতিবন্ধকতাই আমাকে আর দমাতে পারবে না।’ অরেঞ্জ অনলাইন।

তথ্যসূত্রঃ ১৭ এপ্রিল, ২০১১, প্রথম আলো।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-04-17/news/147129

 সেরা ব্লগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশের সাবরিনা দ্বিতীয়

জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের ‘সেরা ব্লগ অনুসন্ধান প্রতিযোগিতা’য় বাংলাদেশের সাবরিনা সুলতানা ‘বেস্ট ব্লগ’ ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় হয়েছেন। তিনি বাংলা ভাষার পক্ষে এ বিভাগে লড়াই করেন। গতকাল মঙ্গলবার ডয়চে ভেলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এমন অর্জনে উচ্ছ্বসিত সাবরিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে। প্রথম হতে পারিনি, তার পরও আমি খুশি। প্রতিবন্ধী মানুষও যে সক্ষম, এটা প্রমাণ করতে পেরে ভালো লাগছে। প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকারের বিষয়টি নিয়ে আমরা যে কাজ করছি, এ অর্জন তারও স্বীকৃতি।’ সাবরিনা সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ও বিচারকেরা সাবরিনাকে এ স্থানের জন্য বেছে নিয়েছেন। সাবরিনাকে পেছনে ফেলে ‘বেস্ট ব্লগ’ পুরস্কার জিতেছেন তিউনিসিয়ার মেয়ে লিনার ‘এ তিউনিসিয়ান গার্ল’। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার বিচারকেরা গত সোমবার জার্মানির বন শহরে বৈঠকে সাবরিনার ব্লগটি সম্পর্কে জানতে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেন। এ বিভাগে পরপর তিনবার বিচারকদের মধ্যে ভোটের আয়োজন করা হয়৷ চূড়ান্ত ভোটে সাবরিনার পক্ষে অবস্থান নেন পাঁচ ভাষার বিচারক। কিন্তু লিনার পক্ষে অবস্থান ছিল সাত বিচারকের। বিচারকদের দুই ভোটের জন্য সাবরিনার প্রথম স্থান হাত ছাড়া হয়।

চট্টগ্রামের মেয়ে সাবরিনা প্রতিবন্ধীদের অধিকার আদায় ও উন্নয়নে কাজ করা বাংলাদেশি সিস্টেমস চেঞ্জ অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক (বি-স্ক্যান) নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। সাবরিনা জানালেন, এ প্রতিযোগিতায় তাঁর অংশগ্রহণের কারণে অনেকেই তাঁদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
ডয়চে ভেলের খবরে জানা গেছে, এবারের প্রতিযোগিতায় মোট ভোট সংখ্যা ছিল ৯০ হাজার ৮০৮। ছয়টি মিশ্র ভাষার ক্যাটাগরিতে ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হলেও বাংলা ভাষার কোনো ব্লগই ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড’ অর্জনে সক্ষম হয়নি। এবারের ‘জুরি অ্যাওয়ার্ড’ জয়ী অন্য ব্লগগুলো হচ্ছে, মানবাধিকার বিভাগে ইংরেজি ভাষার ব্লগ ‘মাইগ্রেন্ট-রাইটস ডট অর্গ’, বেস্ট ভিডিও চ্যানেল নির্বাচিত হয়েছে ফার্সি ভাষার ইউটিউব চ্যানেল ‘স্ট্যান্ডস উইথ ফিস্ট’, টেকনোলজি ফর সোশ্যাল গুড বিভাগে রুশ ভাষার ‘রসপিল ডট ইনফো’, বেস্ট সোশ্যাল অ্যাক্টিভিজম ক্যাম্পেইন বিভাগে আরবি ভাষার ‘উই আর খালিদ সাইদ’ নামের ফেসবুক গ্রুপ এবং রিপোর্টার্স উইদআউট বডার্স বিভাগে জুডিথ টরিয়ার স্প্যানিশ ভাষার ব্লগটি।

সুত্রঃ ১৩ এপ্রিল, ২০১১, প্রথম আলো।
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-04-13/news/146491

Bangladeshi blogger secures 2nd position

Bangladeshi blogger Sabrina Sultana has secured second position in the Best Blog category in blog searching contest of German news broadcaster Deutsche Welle.

The position was elected both by internet users and the judges.

Overtaking Subrina, the blog 'A Tunisian Girl' has won the seventh annual Deutsche Welle Blog Award for blogging about repression and censorship in her country.

The BOBs, the Deutsche Welle announced awards in six multilingual categories on Tuesday and it will be handed over at the Deutsche Welle Global Media Forum in Bonn, Germany on June 20, says a press release.

Although no Bengali blog got the jury award, internet users elected Bangladesh's Ami Rahman Pial's blog in the Best Social Activism category and Arif Jebtik's blog in the Best Bengali Blog category.

Lina Ben Mhenni, a 27-year-old assistant professor at the University of Tunis (http://atunisiangirl.blogspot.com) won the award for blogging about repression and censorship in her country since 2007, long before a popular uprising unseated former president Ben Ali, the release says.

Facebook group 'We are Khaled Said' (www.facebook.com/EIShaheeeed) took the award for Best Social Activism Campaign while Bahrain website 'Migrant Rights in the Middle East' (www.migrant-rights.org) the Special Topic Human Rights Award.

The Best Video Channel Award went to 'Iranian Stand with Fist' (www.youtube.com/user/standswithfist60) while Russian website 'Rospil' (http://rospil.info) won an award for the Best Use of Technology for Social Good category.

The 2011 Reporter without Borders Prize went to the blog 'Ciudad Juárez, en la sombra del narcotráfico" (http://juarezenlasombra.blogspot.com) by Judith Torrea, said the press release.

INTERNATIONALLY ESTABLISHED AWARD

Internet users around the world suggested some 2,100 sites in 11 languages to the contest this year, but the jury trimmed the list down to 187 finalists, the release says.

In addition to the jury's decisions, more than 90,000 ballots were cast in an online vote for the contest's 17 user prizes – one in each of the six multilingual categories as well as one for the best blog in each of The BOBs 11 languages.

In the Best Blog/English category, internet users chose "Rantings of a Sandmonkey" (www.sandmonkey.org/) as the winner.

A list of all the prize winners can be seen online at: http://thebobs.dw-world.de/en/winner, said the release.

Source: 13, April, 2011, Bdnews24
http://www.bdnews24.com/details.php?id=192853&cid=2

এ যেন এক অন্যরকম পাওয়া

খেলার দিন সকাল পর্যন্তও ছিলাম অনিশ্চয়তার মাঝে। ৯ এপ্রিল, শনিবার, বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়ার টিকেট করেছি নর্থ ক্লাব হাউসে কিন্তু আমি এদেশের ভাগ্যবান দর্শকদের একজন নই যে মাঠে গিয়ে সবার সাথে খেলা উপভোগ করতে পারি। তারপরও এবারের বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে মিরপুর স্টেডিয়ামকে ঢেলে সাজানো হয়েছে, আই সি সি রুলস অনুযায়ী সেখানে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই কথা জানা ছিল বলেই সাহস করে টিকেট করেছিলাম। কিন্তু এই ব্যাপারটি কোন রকম প্রচার পায় নি বলে অধিকাংশ মানুষই তা জানেন না। এমন কি স্টেডিয়ামের দায়িত্বে যাঁরা আছেন তাঁরাও না।





যাই হোক টিকিটে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী জন্য আলাদা কোন নির্দেশিকা ছিল না তাই ওখানে নর্থ ক্লাবহাউস গেইটে ডিসবেলিটি লোগো লাগানো থাকা সত্ত্বেও  এই বিশেষ বসার স্থানটির কথা কেউ জানেন না। যেই রিভলভিং স্ট্যান্ড লাগানো গেইট দিয়ে একজন একজন করে দর্শক ঢুকানো হয় সেখান দিয়ে হুইলচেয়ার নিয়ে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। তাই ওখানে যারা কর্মরত নিরাপত্তা কর্মী ও বিসিবির অফিসার ও সেবাদানকারীরা ছিলেন তাঁদের সশরনাপন্ন হতে হলো। সত্যি বলতে কি তাঁদের ব্যবহারে আমরা মুগ্ধ। সবাই খুবই আন্তরিক ছিলেন। আমার সাথে আমার এক ছোট ভাই ছিল। এই ব্যাপারটি নিয়ে আমি একটু টেনশেনে ছিলাম যে আমার সাথে আর কাউকে সেখানে বসতে দেবে কিনা। যাই হোক এ নিয়ে কোন ঝামেলা হয় নি । আমাদের টিকিটটি নিয়ে আলাদা পাঞ্চ করে দিলেন যেন আমার জন্য বড় গেইটটি খুলে দেয়া হয়।




গেইট দিয়ে প্রবেশ করার পর সিঁড়ির পাশাপাশি লম্বা র‍্যাম্প রয়েছে। তাই কোনই অসুবিধা হলো না। এরপর টিকিট চেক করে কোন গেইট দিয়ে ঢুকলে হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে পৌছানো যাবে তা কেউ বলতে পারলেন না। যেহেতু আমার বিষয়টি জানা ছিলে তাই খুঁজে বের করতে পেরেছিলাম। সবার জ্ঞাতার্থে বলে দেই ২৩ নম্বর গেইট দিয়ে ঢুকে একদম শেষ মাথায় এই বিশেষ ব্যবস্থাটি রয়েছে।


মোট পাঁচটি বিশাল বিশাল ধাপ যার প্রত্যেকটিতে পাঁচজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বসতে পারবেন। প্রত্যেকটি ধাপের সাথে উঠা নামার জন্য র‍্যাম্প রয়েছে। এক কথায় চমৎকার আয়োজন।


পাঁচটি সিমেন্টের ধাপ তৈরী করা হয়েছে। এক একটিতে পাঁচজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বসে খেলা দেখতে পারবেন।
প্রতিটি ধাপের সাথে র‍্যাম্প রয়েছে।

কিন্তু কিছু অসংগতিও চোখে পড়েছে, যেমন বাংলাদেশের হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীরা বাইরে বের হন কম কারণ তাঁদের জন্য সেই ধরণের সুযোগ সুবিধা নেই, তাই এই বিশেষ স্থানটিতে কোন রকম ছাউনির ব্যবস্থা না করাটা একটা মস্ত বড় ভুল। তাছাড়াও একজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী যে চেয়ারটিতে বসেন তা বেশীরভাগই স্টিল বা লোহার তৈরী তাই ঐ তীব্র রোদের মাঝে সেগুলো এমন গরম হয়ে উঠে যে সেটাতে বসে থাকাই মুশকিল হয়ে যায়। এদিকটাতে কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।  আশ্চর্যের বিষয় হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য কোন টয়লেট ব্যবস্থা রাখা হয় নি। টয়লেটগুলোর দরজার সার্বজনীন প্রবেশগম্যতার নিয়ম অনুযায়ী ৩০ ইঞ্চি চওড়া হবার কথা কিন্তু সেটি এখানে মানা হয়নি। দরজা চাপা হবার কারণে সেখানে হুইলচেয়ার নিয়ে প্রবেশ করা যায় না।



দরজার মাপ সাবর্জনীন প্রবেশগম্যতার নিয়ম মেনে তৈরী করা হয় নি।

কমোডের দু'পাশে কোন হ্যান্ড রেল বা হ্যান্ডেল নেই


হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য টিকিটে বিশেষ নির্দেশ থাকা প্রয়োজন যাতে কাউন্টারে দেখালেই তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন। তা নাহলে প্রবেশ ও বের হবার সময় বড় গেইটটি খোলার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। তাদের জন্য নেয়া এই বিশেষ ব্যবস্থাটির ব্যাপক প্রচার দরকার যাতে সবাই জানতে পারে এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও সার্বজনীন প্রবেশগম্যতা তৈরীতে এগিয়ে আসেন। টিভিতে দেখা গেছে একজন হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী দক্ষিণ গ্যালারীতে বসে খেলা দেখছেন। হয়তো তাঁর এই ব্যবস্থাটি কথা জানা ছিল না, থাকলে নিশ্চয় এই জায়গাটি তিনি বেছে নিতেন। কারণ গ্যালারীতে হুইলচেয়ার নিয়ে সিঁড়িগুলো পাড় হওয়া খুব কষ্টকর।


বিশেষ স্থানটি ডিসেবিলিটি লোগো দিয়ে চিহ্নিত করে দিলে সবার জানতে ও বুঝতে সুবিধা হবে। যেমনটি উত্তর ক্লাব হাউসের গেইটে করা হয়েছে।

ডিসেবেলিটি লোগো
সবশেষে উত্তর ক্লাব হাউসের সামনে যে ডিসেবিলিটি লোগো ব্যবহার করা হয়েছে তাতে লেখা হয়েছে  ডিসেবল স্পেক্টেটরস ( Disable Spectators, বাক্যটি ভুল, আসলে হবে Disabled Spectators ডিসেবেল্ড স্পেক্টেটরস )। এই ডিসেবেল্ড শব্দটি প্রতিবন্ধী মানুষের কাছে ভীষণ আপত্তিকর একটি শব্দ।  আমরা এর বদলে স্পেক্টেটরস উইথ ডিসেবিলিটিজ (Spectators with Disabilities) করার বিনীত অনুরোধ করছি। কারণ সারা বিশ্বব্যাপী ডিসেবল্ড কথাটি বর্জন করা হচ্ছে। ব্যক্তির আগে তার প্রতিবন্ধিতার কথা বলা যাবে না। Person first, disabilities last.বাংলাদেশে আমাদের জানা মতে এই প্রথম কোন বড় জায়গায় ডিসেবিলিটি লোগো ব্যবহার করা হলো যা প্রশংসার দাবী রাখে। তাই এই নেতিবাচক বাক্যটি সরিয়ে তাকে সার্থক করে তোলা হোক সেটাই আমাদের কাম্য। 
সামনে বাংলাদেশের আরো খেলা হবে, আশা করি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীরা এই সুযোগটির স্বদব্যবহার করবেন। ভালমন্দ সবকিছু মিলিয়ে মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়াম এ নেয়া বিশেষ ব্যবস্থা এ যেন সত্যি এক অন্যরকম পাওয়া।


- সালমা মাহবুব।

১১ এপ্রিল ২০১১, দৈনিক সমকাল।

ইউনিভার্সাল টিউটোরিয়াল স্কুল

শিক্ষাই সকল শক্তির আধার। আর এই শিক্ষা থাকেই বঞ্চিত এ দেশের ১৬ লক্ষ প্রতিবন্ধী শিশু। তাঁদের মাত্র ৪% স্কুলে যাবার সুযোগ পাচ্ছে। বি-স্ক্যান এর মূল চারটি বিষয়ের একটি হচ্ছে সকল প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ্যাডভোকেসি করা। গত ৩০ এপ্রিল, বুধবার সেই উদ্দেশ্যেই বি-স্ক্যান এর একটি দল গিয়েছিল ইউনিভার্সিটি টিউটোরিয়াল স্কুলে। তাঁদের ব্যবহার ছিল এদেশের আর দশটা স্কুল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।  তাঁরা বললেন প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষার ব্যাপারে সহযোগিতা করতে তাঁরা আগ্রহী এবং করছেনও। স্কুলের প্রশাসক নাসিম ইকবাল ও ভাইস প্রিন্সিপাল জিনাত আমিন এর সাথে কথা বলে যা জানা গেল তা হলো






১। তাঁদের স্কুলে মৃদু থেকে মাঝারী মাত্রার প্রতিবন্ধী শিশুদের পড়ায় কোন বাঁধা নেই।
২। প্রতিবন্ধী শিশুদের ব্যাপারটি নিয়ে তাঁরা বেশ সচেতন। তাঁদের স্কুলে বর্তমানে শারীরিক ২ দুজন ও একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশু পড়ছে।
৩। বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে পেরেন্টস ডে তে বিশেষভাবে প্রতিবন্ধী শিশুদের লেখাপড়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য তাঁ উদ্ভুদ্দু করতে বলা হয় এবং তাঁরা একমত পোষণ করেন।
৪। বি-স্ক্যান এর সন্ধানে যদি কোন মৃদু থেকে মাঝারী মাত্রার শারীরিক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুর খোঁজ থাকে তাহলে তাঁদেরকে ঐ স্কুলে ভর্তির আবেদন জানাতে বললেন। তাঁরা সাদরে তাদের গ্রহণ করবেন। তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এই মুহুর্তে তাঁরা প্রস্তুত নন।
৫। বি-স্ক্যান যদি যোগ্য ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াতে সক্ষম এমন কোন শিক্ষকের সন্ধান দিতে পারেন তাহলে তাঁরা বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।
৬। সবশেষে বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে একটি পাওয়া পয়েন্ট প্রেজেন্টেশেন করার প্রস্তাব করে হলে তা সাদরে গ্রহন করা হয়। শীঘ্রই প্রেজেন্টেশেনটি করা হবে বলে বি-স্ক্যান এর পক্ষ  থেকে তাঁদের জানানো হয়।

- সালমা মাহবুব

Zahur Ahmed Chowdhury Stadium Physically challenged denied access

Zahur Ahmed Chowdhury Stadium (ZACS), the venue that hosted two matches of Cricket World Cup 2011 in the port city, lacks in facility required to allow access and easy movement of physically-challenged people.

The authority disregarded both the National Building Code and Dhaka Metropolitan Building Act 2008 while constructing the stadium without any ramp and suitable toilet - two of the major requirements for any ICC cricket venue, for the physically challenged-people.

As per the provisions, there should have been a 36-inch ramp with security wall at the entrance and a toilet with grab-bar or handrail in both sides, which were totally ignored during construction of the stadium, alleged the sufferers.

None of the 57 seats, out of total 18,563, designated for physically challenged persons had any special feature, they said.

Sabrina Sultana, a wheel chair user and President of Bangladesh System Change Advocacy Network (B-SCAN) said that they went to the venue before the match between Bangladesh and England. "But, I was quite disappointed to see that there is no scope for people like me to enjoy the match in the stadium," said Sabrina. The Mirpur Stadium in Dhaka has separate area for wheel chair users, built-in ramp in every entrance and toilets accessible to physically challenged persons as per the international standard, she said.

When contacted Murshid Abedin, chief engineer of the venue, said they were noticed of the problem physically challenged persons faced at the stadium. "We would immediately start developing facilities for them. They won't have to face the problem in entering the venue or easy movement during the next twenty-twenty World Cup matches at the venue in Bangladesh in 2014," said the engineer.
By Nirjhar MozumderSource: 2 April, 2011. Daily Sun.
http://www.daily-sun.com/index.php?view=details&type=daily_sun_news&pub_no=175&cat_id=1&menu_id=39&news_type_id=1&news_id=36426

প্রতিবন্ধিতার কাছে হার না মানা মালেকের পাশে বি-স্ক্যান

মালেক শেখ, মুজিবনগর নিবাসী, জন্ম হয়েছিল শারীরিক প্রতিবন্ধিতা নিয়ে। অনেকেই তাকে দেখে হয়তো মানুষ বলে মেনে নিতে চান নি। কিন্তু আজ নিশ্চয়ই তাঁকে সবাই সমীহ করেন, ভালবাসেন। মালেকের শিক্ষা জীবনের শুরটা ছিল অনেক কঠিন। ছোটবেলা বাবা মারা গেছেন,দুই ভাই এক বোনের সংসারটি তার মা সেলাই কাজ করেই চালাতেন। মালেক ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী ছিলেন তিনি। তাঁর মা সর্বাত্নক সহযোগিতা করেছেন এই ইচ্ছে পূরণে। ক্লাস ওয়ানে যখন একটি মিশনারি স্কুলে তাঁকে ভর্তি করার চেষ্টা করা হয় তখন সেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁকে নেন নি প্রতিবন্ধিতার কারণে। পরে সরকারি একটি স্কুল তাঁকে একমাস পর্যবেক্ষণের শর্তে স্কুলে নেয়, যখন তারা মালেকের মেধার পরিচয় পেলেন তখন তাঁকে ভর্তি করে নেন। এই স্কুল থেকেই মালেক এস এস সি পাশ করেছেন। তার মা প্রতিদিন তাঁকে স্কুলে পৌছে দিয়ে বসে থাকতেন ছুটির পর একবারে বাসায় নিয়ে যেতে। এসএসসি পাশের পর মালেক স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হলেন যেটা বাড়ি থেকে আট মেইল দূরে ছিল। বন্ধুর সাথে সাইকেল এর সামনে বসেই চলে যেতেন। মালেকের বন্ধু ভাগ্য ভাল না হলো তিনি হয়তো তাঁর লেখাপড়া সেভাবে এগিয়ে নিতে পারতেন না। সবাই তাকে সহযোগিতা করতো। কলেজ উঠার পর থেকে মালেকের এক খালাতো ভাই তার সাথে পড়তেন যিনি সবসময় তাঁকে সহযোগিতা করে এসেছেন। ইচ্ছে ছিল এইচএসসি র পর অনার্স পড়বেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, প্রথমবার তিনি সুযোগ পেলেও তাঁর ভাইটি পেলেন না তাই পড়া হলো না। পরে পরীক্ষা দিলেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে সেখানে একই অবস্থা তাঁর ভাই পাশ করলেন না। এই বছর আবার পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফরমেশেন সায়েন্সে ওয়েটিং লিস্ট এ ছিলেন। কিন্তু একা থাকা ও দোতলা তিনতলায় ক্লাস করা সম্ভব নয় বলে আর সেখানে পড়া হলো না। মালেক অবশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছিলেন, এখন সেখানেই পলিটিকাল সায়েন্সে অনার্স পড়ছেন। যদিও ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরাজিতে অনার্স পড়ার। সেই স্বপ্ন পূরণ হয় নি তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারনে। আজ বি-স্ক্যান এর পক্ষ থেকে বইপত্র কেনার জন্য ৬০০০ টাকার একটি চেক তুলে দেয়া হলো মেধাবী ছাত্র মালেক শেখ এর হাতে। শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে যিনি এগিয়ে চলেছেন।





সব জায়গায় হুইলচেয়ার নিয়ে চলাচলের সুবিধা নেই বলে মালেক কখনও বন্ধু কখনও বা ভাইয়ের কাঁধে চড়ে ঘুরে বেড়ান। ঢাকা এলে হুইলচেয়ারটি তিনি বাড়িতেই রেখে আসেন। মালেক আজ হাতে পেয়েছেন একটি ল্যাপটপ ও ইন্টানেট সংযোগ। আমরা আশা করছি খুব শীঘ্রই অনলাইনে তাঁকে আমাদের মাঝে দেখতে পাবো। 

- সালমা মাহবুব
২৪ এপ্রিল, ২০১১

 
Design by Oronno Anam | Bloggerized by Salma Mahbub